স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী প্রশ্ন উত্তর | Class 7 | WBBSE
১. ঠিক উত্তরটি বেছেনিয়ে লেখো :
১.১ ননীবালা দেবীবিপ্লবের দীক্ষা পেয়েছিলেন (অমরেন্দ্রচ্যাটার্জি/যাদুগোপাল মুখার্জি/ ভোলানাথ চ্যাটার্জি)-এর কাছে।উত্তর - অমরেন্দ্রনাথচ্যাটার্জির কাছে।
১.২ ননীবালা দেবী(রিষড়াতে/চুঁচুড়াতে/চন্দননগরে) অমর চ্যাটার্জি ওতাঁর কয়েকজন সহকর্মীকে আশ্রয় দেন।
উত্তর - রিষড়াতে।
১.৩ চন্দননগর থেকেপালিয়ে ননীবালা দেবী যান (পেশোয়ারে/কাশীতে/রিষড়াতে)।
উত্তর - পেশোয়ারে।
১.৪ কাশীর ডেপুটিপুলিশ সুপার (জিতেন ব্যানার্জি/হিতেন ব্যানার্জি/যতীনব্যানার্জি) ননীবালা দেবীকে জেরা করতেন। উত্তর - জিতেন ব্যানার্জি।
১.৫ পুলিশ সুপারগোল্ডির কাছে ননীবালা দেবী(সারদামণি দেবী/ভগিনী নিবেদিতা/দুকড়িবালা দেবী)র কাছেথাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
উত্তর - সারদামণি দেবীর কাছে।
১.৬ দুকড়িবালা দেবীবিপ্লবের অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন (বোনপো/ভাইপো/ভাই) নিবারণ ঘটকের কাছে।
উত্তর - বোনপো নিবারণ ঘটকেরকাছে।
১.৭ বিপ্লবী হরিদাসদত্ত (গাড়োয়ান /পুলিশ/খালাসি)-রছদ্মবেশে পিস্তল চুরি করেন।
উত্তর - গাড়োয়ানের ছদ্মবেশে।
২. সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও
২.১ বিপ্লবীরামচন্দ্রমজুমদারের‘মসার' (পিস্তল)-এরখোঁজনেওয়ারজন্যননীবালাদেবীকীকৌশলঅবলম্বনকরেছিলেন?
উত্তর - বিধবা ননীবালা দেবীরামচন্দ্র মজুমদারের স্ত্রী সেজে, রামবাবুরসঙ্গে প্রেসেডেন্সি জেলে ইনটারভিউ নিয়েজেনে এলেন ‘মসার’ (পিস্তলের)-এর গুপ্ত খবর।
২.২ “এঁদেরসকলেরইমাথায়অনেকহাজারটাকারহুলিয়াছিল”– 'হুলিয়া' শব্দটিরঅর্থকী? এঁরাকারা? এঁদেরআশ্রয়দাত্রীকেছিলেন? হুলিয়াথাকারজন্যএঁরাকীভাবেচলাফেরাকরতেন?
উত্তর - পুলিশের চোখের আড়ালে থাকা অপরাধীকে ধরতে অপরাধীর বর্ণনা সম্বলিত একটি বিজ্ঞাপনী প্রচারণা হুলিয়া। তারা হলেন বিপ্লবী নেতা যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায়, অমর চ্যাটার্জি, অতুল ঘোষ, ভোলানাথ চ্যাটার্জি, নলিনীকান্ত কর, বিনয়ভূষণ দত্ত এবং বিজয় চক্রবর্তী। ননীবালা দেবী ছিলেন তার রক্ষক।
তারা সারাদিন ঘরে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে কাটাতো। তিনি শুধু রাতে বের হতেন। পুলিশ নির্মম শিকারীর মতো এসে তাৎক্ষণিকভাবে তারা অদৃশ্য হয়ে যায়।
২.৩ “ননীবালাদেবীপলাতকহলেন”–ননীবালাদেবীপালিয়েযেতেবাধ্যহয়েছিলেনকেন? তিনিপালিয়েকোথায়গিয়েছিলেন? সেখানেতিনিকোন্অসুখেআক্রান্তহন?
উত্তর - বিধবা ননীবালা দেবী রামবাবুর স্ত্রী সেজে বিপ্লবী রামচন্দ্র মজুমদারের কাছ থেকে তার মশার বন্দুকের হদিস খুঁজে বের করতে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যিনি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ শীঘ্রই আবিষ্কার করে যে বিধবা ননীবালা দেবী রামবাবুর স্ত্রী নন। তদুপরি, ননীবালা দেবী একবার সেই বিপ্লবীদের নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছিলেন যারা চন্দননগরে একসময় গৃহবধূর পোশাক পরে হুলিয়া জারি করেছিলেন। পুলিশ এসব ঘটনা জানতে পেরে ননীবালা দেবীকে গ্রেফতার শুরু করে। ননীবালা দেবী পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
নানিবালা দেবী তার ছোটবেলার বন্ধুর দাদা প্রবোধ মিত্রের সাথে পেশোয়ারে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি তিন দিন কলেরায় ভুগছিলেন।
২.৪ “ননীবালাদেবীসবইঅস্বীকারকরতেন” — ননীবালাদেবীকোন্কথাঅস্বীকারকরতেন? তারফলশ্রুতিইবাকীহত?
উত্তর - পুলিশ ননীবালা দেবীকেগ্রেপ্তার করে যখন বিপ্লবীদেরঅনুসন্ধানের জন্য হাজার রকমেরজেরা করত তখন ননীবালাদেবী সবই অস্বীকার করতেন। তারফলশ্রুতিতে ননীবালা দেবীকে পুলিশের হাতেকঠিন অত্যাচার সহ্য করতে হত।
২.৫ কাশীরজেলের‘পানিশমেন্টসেল'-টিরঅবস্থাকেমনছিল? সেখানেননীবালাদেবীরওপরকীধরনেরঅত্যাচারকরাহত?
উত্তর - কাশীতে, পুরানো কারাগারের দেয়ালের বাইরে একটি ভূগর্ভস্থ 'শাস্তি সেল' ছিল। অর্থাৎ শাস্তির কুঠার। এর একটি মাত্র দরজা ছিল, কিন্তু আলো-বাতাসের জন্য কোনো জানালা বা দরজা ছিল না।
পুলিশ অফিসার জিতেন ব্যানার্জী নানিবালা দেবীকে আলো-বাতাসবিহীন অন্ধকার কক্ষে প্রায় তিন দিন আধা ঘণ্টা আটকে রেখেছিলেন। সেই অবস্থায় ননীবালা দেবী অর্ধমৃত ছিলেন, কিন্তু তিনি মুখে স্বীকার করেননি। তৃতীয় দিনেও, পুলিশ তাকে প্রায় 45 মিনিট ধরে একইভাবে আটকে রেখে তার স্নায়ু চূর্ণ করার শেষ চেষ্টা করেছিল। এরপর তালা খুলে তাকে অচেতন অবস্থায় সেখান থেকে বের করা হয়।
২.৬ “ননীবালাদেবীতখুনিদরখাস্তলিখেদিলেন” — ননীবালাদেবীকাকেদরখাস্তলিখেদিয়েছিলেন? দরখাস্তেরবিষয়বস্তুকীছিল? শেষপর্যন্তসেইদরখাস্তেরকীপরিণতিহয়েছিল?
উত্তর - ননীবালা দেবী কলকাতার প্রেসিডেন্সিজেলে আই. বি. পুলিশেরস্পেশাল সুপারিনটেন্ডেন্ট গোল্ডি (Goldie) সাহেবকে দরখাস্ত লিখে দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্সিজেলে ননীবালা দেবীকে নিয়ে আসারপর তিনি খাওয়া বন্ধকরে দিয়েছিলেন। তখনগোল্ডি তাঁকে প্রশ্ন করে, কী করলে তবেই তিনিখাবেন? ননীবালা বলেন, রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবেরস্ত্রীর কাছে তাঁকে থাকতেদিলে তবেই তিনি খাদ্যখাবেন। তখনগোড্ডি তাঁকে দরখাস্ত লিখতেবললে তিনি তখুনি দরকাস্তলিখে দেন।
২.৭ “এবারআমায়দলেনিয়েনাও”– কে, কাকেএইঅনুরোধজানিয়েছিলেন? তিনিকেন, কোনদলেঅংশগ্রহণকরতেইচ্ছুকছিলেন?
উত্তর - দুকড়িবালা দেবী বিপ্লবী কর্মকাণ্ডেজড়িত তাঁর বোনপো নিবারণঘটককে এই অনুরোধ জানিয়েছিলেন। মাসিমাদুকড়িবালা দেবী নিবারণ ঘটকেকেখুব স্নেহ করতেন।বোনপো প্রায়ই তাঁর বাড়িতে বন্ধুবান্ধবনিয়ে আসতেন। স্বদেশিবই, বেআইনি বই লুকিয়েপড়ার আড্ডা ছিল তারমাসিমার বাড়ি। মাসিমাএসব দেখে শুনে পরাধীনভারতমাতার শৃঙ্খল মোচনের জন্যবোনপো নিবারণের বিপ্লবী দলে যোগদানের জন্যপ্রবল আগ্রহী হয়ে উঠলেন।
২.৮ পুলিশকোন্অভিযোগেদুকড়িবালাদেবীকেগ্রেপ্তারকরে? বিচারেতাঁরকীশাস্তিহয়?
উত্তর - ১৯১৪ সালের ২৬আগস্ট জাহাজঘাট থেকে খালাস করারডা কোম্পানির সরকারি অস্ত্রশস্ত্র সাতটিগোরুর গাড়ি বোঝাই করেকোম্পানির গুদামে আনা হচ্ছিল। সেইসময় বিপ্লবী হরিদাস দত্ত গাড়োয়ানসেজে অস্ত্র বোঝাই একটিগোরুর গাড়ি নিয়ে উধাওহয়ে যান এবং সেগুলিবিপ্লবীদের বিভিন্ন কেন্দ্রে পাচার হয়ে যায়। এইঘটনায় পুলিশ হন্যে হয়েবিপ্লবীদের ধরার চেষ্টা করে। এরপ্রায় তিন বছর পরে১৯১৭ সালের জানুয়ারি মাসেপুলিশ ভীষণ সন্দেহবশত দুকড়িবালাদেবীর বাড়ি তল্লাশি করে। তারাসেখানে সাতটি মসার পিস্তলউদ্ধার করে। ফলেদুকড়িবালা দেবী পুলিশের হাতেগ্রেপ্তার হন ।
বিচারেদুকড়িবালা দেবীর শাস্তি হয়দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড।
৩. নিজের ভাষায় নীচেরপ্রশ্নগুলির উত্তর দাও :
৩.১ স্বাধীনতাসংগ্রামেঅংশগ্রহণকারীস্বনামধন্যখ্যাতনামাবিপ্লবীদেরতুলনায়ননীবালাদেবীওদুকড়িবালাদেবীরঅবদানসামান্যনয়— এবিষয়েতোমারমতামতজানাও।
উত্তর - ক্ষুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকী, মাস্টারদা সূর্য সেন, বিনয় বাদল দীনেশ প্রমুখের বিপ্লবী কর্মকাণ্ড থেকে। স্বাধীনতা সংগ্রামে যেসব বিখ্যাত বিপ্লবী অংশ নিয়েছিলেন, আমি বুঝি তাদের তুলনায় স্বাধীনতা সংগ্রামে ননীবালা দেবী ও দুকরিবালা দেবীর অবদান কম নয়। প্রথমত, ননীবালা দেবী এবং দশজন বিধবার মতো সাধারণ পারিবারিক জীবনযাপন করতে পারতেন। কিন্তু হুলিয়া জারি করা পলাতক বিপ্লবীদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি যে সাহসী বীরত্ব প্রদর্শন করেছেন তা যথার্থই প্রশংসনীয়। তদুপরি, তিনি পুলিশের হাতে ধরা পড়েন এবং অকথ্য নির্যাতনের শিকার হন, তবে তিনি পুলিশের কাছে স্বীকার করেননি।
স্বাধীনতার লড়াইয়ে অংশ নেওয়া দুকরিবালা দেবীও পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন। তাকে তার ছোট ছেলেকে ছেড়ে দুই বছরের জন্য কঠোর কারাবাস সহ্য করতে হয়েছিল। তাই আমি মনে করি স্বাধীনতার লড়াইয়ে অংশ নেওয়া এই দুই সাহসী নারীর জীবন কাহিনী ভারতীয় ইতিহাসে বিখ্যাত যোদ্ধাদের পাশাপাশি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
৩.২ ননীবালাদেবীওদুকড়িবলাদেবীরঅনমনীয়বৈপ্লবিকমনোভাবকীভাবেপরবর্তীকালেরবিপ্লবীনারীকেপথদেখিয়েছে? — পাঠ্যগদ্যাংশঅবলম্বনেতোমারমতামতজানাও৷
উত্তর - 1947 সালে, অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগ, এবং নিঃস্বার্থতার বিনিময়ে ভারত স্বাধীনতা লাভ করে। 1914 সালে, হাওড়া জেলার একজন বিধবা ননীবালা দেবী অনেক ঝুঁকি নিয়েছিলেন এবং ভারত মাতার মুক্তির জন্য বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিক্ষেপ করেছিলেন। তিনিও পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। তিনি পুলিশের হাতে অকথ্য নির্যাতন সহ্য করেছেন এবং দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করেছেন। তবে তিনি এতটাই অনড় ছিলেন যে পুলিশ তার কাছ থেকে আসল সত্য বের করতে পারেনি।
একই বছর বীরভূমের দুকরিবালা দেবীও বিপ্লবীদের দেশপ্রেমের শিকল ভাঙতে সাহায্য করতে গিয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়েন। সে সময় তার যে বাচ্চা ছিল তাও তাকে ছেড়ে দিতে হয়েছিল। কিন্তু দেশের স্বাধীনতা জয়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি হাসিমুখে তা সহ্য করেছেন। সন্দেহ নেই যে তার অকল্পনীয় তেজ এবং অদম্য মনোভাব 1914-পরবর্তী যুগে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদা, মাতঙ্গিনী হাজরা এবং অন্যান্যদের মতো অনেক নারী মুক্তিযোদ্ধাকে অনুপ্রাণিত করেছিল।
৫. ঘটনার ক্রমানুসারেসাজিয়েলেখো:
উত্তর -
(1) ৫.৭ ভাইপো অমরেন্দ্রচ্যাটার্জীর কাছে বিপ্লবের দীক্ষাপেলেন ননীবালা দেবী।
(2) ৫.৮ রামচন্দ্র মজুমদারেরস্ত্রী সেজে প্রেসিডেন্সি জেলথেকে ননীবলা দেবী সংগ্রহকরলেন পিস্তলের গুপ্ত খবর।৫.৫ অমর চ্যাটার্জীও তাঁর সহকর্মীকে রিষড়াতেদুইমাস আশ্রয় দিলেন ননীবালাদেবী।
(3) ৫.১ চন্দননগরে যাদুগোপালমুখার্জী, অমর চ্যাটার্জী, অতুলঘোষ প্রমুখ বিপ্লবীকে আশ্রয়দানও সেখান থেকে পলায়নকরলেন ননীবালা দেবী।
(4) ৫.২ পেশোয়ার থেকেগ্রেপ্তার করে কাশীতে পাঠানোহল ননীবালা দেবীকে এবং আলোবাতাসহীনবন্ধ ঘরে তালাবন্ধ করেশাস্তি দেওয়া হত।
(5) ৫.৪ আই.বি. পুলিশের স্পেশাল সুপারিনটেন্ডেন্ট গোল্ডি ননীবালা দেবীকেজেরা করতেন।
(6) ৫.৩ বাগবাজারে মাসারদার কাছে থাকার ইচ্ছাপ্রকাশ করে দরখাস্ত লিখলেনননীবালা দেবী।
(7) ৫.৬ পুলিশ সুপারগোল্ডি দরখাস্ত ছিঁড়ে ফেলায় ক্ষিপ্তননীবালা দেবী এক চড়বসিয়ে দিলেন গোল্ডির মুখে।
৬. কে, কোন্আন্দোলনেরসঙ্গেযুক্তমিলিয়েলেখোঃ
উত্তর -
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার | ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণ |
মাতঙ্গিনী হাজরা | আইন অমান্য আন্দোলন |
সরোজিনী নাইডু | লবণ সত্যাগ্রহ |
ঝাঁসির রানী লক্ষ্মীবাই | সিপাহী বিদ্রোহ |
৭. পাঠ্য গদ্যাংশটিপড়েনিম্নলিখিতব্যক্তিদেরসম্পর্কেকীজানাযায়লেখো।
উত্তর –
অমরেন্দ্র চ্যাটার্জি: বিপ্লবী অমরেন্দ্র চ্যাটার্জি ছিলেন নানিবালা দেবীর ভাগ্নে। তাঁর কাছ থেকেই বিধবা ননীবালা দেবী বিপ্লবী মন্ত্রে দীক্ষিত হন। একবার, অমর চ্যাটার্জি তার এক সহকর্মীকে নিয়ে পুলিশের চোখ এড়াতে বিধবা পিসিমা নানিবালা দেবীর কাছে রিশাদার বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাদের এখানেও দেখতে পেয়ে সেখান থেকে আবার পালিয়ে যায়। কিন্তু তার সহকর্মী রামচন্দ্র মজুমদার ধরা পড়েন।
প্রবোধ মিত্র: নানিবালা দেবীর বাল্যবন্ধুর দাদা ছিলেন প্রবোধ মিত্র। ব্যবসার কাজে তাকে পেশোয়ার যেতে হয়েছিল। ননীবালা দেবী নিজেকে বাঁচানোর জন্য নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছিলেন যখন পুলিশ তাকে ধরার জন্য অপেক্ষা করছিল। নানিবালার বাল্যবন্ধু তার দাদা প্রবোধবাবুর কাছে মিনতি করে যেন নানিবালাকে পেশোয়ারে তার সঙ্গে লুকিয়ে থাকতে দেয়।
জিতেন ব্যানার্জী: জিতেন ব্যানার্জি কাশী জেল-গেট অফিসে ডেপুটি পুলিশ সুপার ছিলেন। কাশীতে একটি পুরনো আমলের কারাগার ছিল। নানিবালা দেবী পেশোয়ার পুলিশের হাতে ধরা পড়লে তাকে প্রথমে কাশীর জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে জেরা করেন জিতেন ব্যানার্জি। নানিবালার স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য, জিতেন ব্যানার্জী তাকে প্রায় আধঘণ্টা শাস্তি সেলে, অর্থাৎ আলো বা বাতাস ছাড়াই মাটির নিচে তৈরি একটি শাস্তি সেলের মধ্যে বন্দী করে রেখেছিলেন। কিন্তু নানিবালা দেবীকে তিন দিনের শাস্তি দেওয়ার পর পদত্যাগ করেন জিতেন ব্যানার্জি।
গোল্ডি: গোল্ডি ছিলেন কলকাতার রাষ্ট্রপতি কারাগারের প্রথম। বিশেষ পুলিশ সুপার বি. নানিবালা দেবীকে কাশী জেল থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে আনা হলে নানিবালা খাওয়া বন্ধ করে দেন। ফলে গোল্ডি তাকে খেতে প্রলুব্ধ করতে থাকে। সে নানিবালাকে জিজ্ঞেস করলো তুমি কি খাবে? গোল্ডির দয়া দেখে, নানিবালা সহজভাবে বললেন, "আপনি যদি তাকে রামক্রিদেবের স্ত্রী সারদামণি রাখতে দেন তবে তিনি অবশ্যই খাবেন।" গোল্ডিতাকে এর জন্য একটি আবেদনপত্র লিখতে বললে, নানিবালা সঙ্গে সঙ্গে আবেদনটি লিখে তার হাতে দেন। গোল্ডি ফর্মটা হাতে নিয়ে, ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ছেঁড়া কাগজে ফেলে দিল। এটা দেখে গোল্ডিকে নানিবালার হাতে একটা ভালো চড় খেতে হলো। ননীবালা মুহূর্তের মধ্যে দ্বিতীয় থাপ্পড় পেতে যাচ্ছিল, কিন্তু গোল্ডিকে বাঁচিয়েছিলেন আরেক পুলিশ সদস্য।
নিবারণ ঘটক: নিবারণ ঘটক, খনির ক্লাসের ছাত্র, ছিলেন দুকরিবালা দেবীর চাচাতো ভাই। তিনি স্বদেশী আন্দোলনে সাবস্ক্রাইব করেছিলেন এবং মাসি দুক্রিবালা দেবীর বাড়িতে তার বন্ধুদের সাথে গোপনে আড্ডা দিতেন। তিনি গোপনে স্বদেশী বই, অবৈধ বই পড়তেন। আন্টি দুকরিবালা দেবীর প্রচন্ড আগ্রহ তাকে তার দলের সঙ্গী হিসেবে নিয়ে যায়। একদিন সে রোদা কোম্পানি থেকে চুরি করা সাতটি মশার পিস্তল নিয়ে আসে এবং তার খালা দুক্রিবালা দেবীকে সেগুলি লুকিয়ে রাখতে বলে। মাসি দুক্রিবালা দেবীকে অবশ্য তাকে সাহায্য করার জন্য পুলিশের হাতে ধরা পড়তে হয়েছিল। এ কারণে দুকরিবালা দেবী শিশুটিকে কোলে রেখে দুই বছরের কঠোর কারাদণ্ড ভোগ করতে বাধ্য হন।
হরিদাস দত্ত: হরিদাস দত্ত স্বদেশী আন্দোলনের সাথে জড়িত একজন দুঃসাহসিক ব্যক্তি ছিলেন। 1914 সালের26শে আগস্ট, রোডা কোম্পানির জেটি-সরকার শ্রীশ মিত্র বড়সাহেবের আদেশ অনুসারে মালামাল আনলোড করতে জহগ ঘাটে যান। তিনি অস্ত্রের 202টি মামলা আনলোড করেছেন এবং সাতটি গরুর গাড়ি বোঝাই করেছেন। তিনি রোদা কোম্পানির ডিপোতে ছয়টি গাড়ি পৌঁছে দেন। একটি গাড়ির চালক, হরিদাস দত্ত, একজন গোপন বিপ্লবী, গাড়ি নিয়ে উধাও। ওই গাড়িতে ছিল ৯টি কার্তুজের বাক্স এবং একটি ছিল একটি মশারি পিস্তল। হরিদাস দত্তের দুঃসাহসী কৌশলে চুরি করা এই অস্ত্রগুলি বিপ্লবীদের বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল।
৮. অর্থ লেখোওবাক্যরচনাকরো:
হুলিয়া, মসার, দরখাস্ত, কারাদণ্ড, নিশাচর
উত্তর -
হুলিয়া | পলাতক আসামীকে ধরার জন্য তার চেহারার বিবরণ দিয়ে ঘোষণা) | খুনির মাথার দাম এক লাখ বলে পুলিশ হুলিয়া জারি করল। |
মসার | এক ধরনের পিস্তল | আগেকার দিনের বিপ্লবীরা মসার পিস্তল ব্যবহার করতেন। |
দরখাস্ত | আবেদনপত্র | চাকরির পরীক্ষা দিতে গেলে দরখাস্ত লিখতে হয়। |
কারাদণ্ড | জেল | চোরটার তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হল। |
নিশাচর | রাতেরবেলায় যে বিচরণ করে | প্যাঁচা একটি নিশাচর পাখি। |
৯. নীচের স্থূলাক্ষরঅংশগুলিরকারকওবিভক্তিনির্ণয়করো:
৯.১ বিপ্লবী অমরেন্দ্রচ্যাটার্জির কাছে বিপ্লবের দীক্ষাপেলেন ননীবালা দেবী।
উত্তর - কর্মকারকে ‘র’ বিভক্তি।
৯.২ ১৯১৫ সালেচন্দননগরে আবার বাড়ি ভাড়ানেওয়া হয়েছিল।
উত্তর - স্থানাধিকরণে ‘এ’ বিভক্তি।
৯.৩ স্নায়ুর শক্তিকেচূর্ণ করে দেবার চূড়ান্তপ্রচেষ্টা।
উত্তর - সম্বন্ধপদে ষষ্ঠী বিভক্তি অথবাকর্মকারকে ‘কে' বিভক্তি ।
৯.৪ এগুলিছিল রডা কোম্পানি থেকেচুরি করে আনা মাল।
উত্তর - ‘থেকে’ অনুসর্গ যোগেঅপাদান কারক।
৯.৫ ছখানা গাড়িতিনি রডা কোম্পানির গুদামেপৌঁছে দেন।
উত্তর - সম্বন্ধপদে ষষ্ঠী বিভক্তি।
৯.৬ তল্লাশিতে পাওয়াযায় সাতটা মসার পিস্তল।
উত্তর - করণ কারকে ‘তে’ বিভক্তি। কর্মকারকেশূন্যবিভক্তি।
৯.৭ শত জেরাতেওমাসিমার মুখ থেকে বেরকরতে পারল না।
উত্তর - ‘থেকে’ অনুসর্গ যোগেঅপাদান কারক ।
১০. এককথায় লেখো:
উত্তর -
পলায়ন করেছেনে যিনি | পলাতক |
একসঙ্গে কাজ করেন যিনি | সহকর্মী |
বাজপাখির মতো তীক্ষ্ণ দৃষ্টি | শ্যেনদৃষ্টি |
বাল্যকালের বন্ধু | বাল্যবন্ধু |
আবেদন জানিয়ে লিখিত পত্র | আবেদনপত্র, দরখাস্ত |
মহানকর্মে ব্রতী নারী | মহীয়সী |
এগিয়ে থাকেন যিনি | অগ্রণী |
অগ্রে গমন করেন যিনি | অগ্রগামী |
<< Read More >>
Class 7 All Subject Solution >>