Class 7 প্রথম অধ্যায় | পৃথিবীর পরিক্রমণ কিছু প্রশ্নবলী | WBBSE
পৃথিবীর পরিক্রমণ
Q.- কোন্ কোন্ ঋতুতে বেশিরভাগ দিন নীল আকাশ দেখা যায়?
Ans. - শরৎ ঋতুতে বেশির ভাগ দিন নীল আকাশ দেখা যায়।
Q.- মকরক্রান্তি রেখার মান কত?
Ans. – 23.5
Q.- কোন্ দিন উত্তর গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড়ো ও রাত সবচেয়ে ছোটো হয়?
Ans. - 21শে জুন।
Q.- পৃথিবী কক্ষতলের সাথে কত ডিগ্রি কোণে হেলে থাকে?
Ans. - 66.5° কোণে হেলে থাকে।
Q.- সূর্য কোন্ কোন্ গ্যাসে পূর্ণ ?
Ans. - সূর্য হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাসে পূর্ণ ।
Q.- কার সময় থেকে জানা যায় বিভিন্ন গ্রহগুলি সূর্যের চারিদিকে ঘোরে?
Ans. - বিজ্ঞানী কোপারনিকাসের সময় থেকে জানা যায় ৷
Q.- পৃথিবীর অক্ষ কাকে বলে?
Ans. - যে কল্পিত রেখার চারিদিকে পৃথিবী আবর্তন করে তাকেই পৃথিবীর অক্ষ বলে।
Q.- কোন্ ঋতুতে মাঠের মাটি ফেটে যায়?
Ans. - গ্রীষ্ম ঋতুতে মাঠের মাটি ফেটে যায়।
Q.- কোন্ ঋতুতে পুকুরগুলো জলে ভরতি থাকে?
Ans. - বর্ষা ঋতুতে পুকুরগুলো জলে ভরতি থাকে।
Q.- মহাকর্ষ কাকে বলে?
Ans. - পৃথিবীর সব বস্তুই পরস্পরকে আকর্ষণ করে বা নিজের দিকে টানে, একেই মহাকর্ষ বলা হয়।
Q.- সূর্য পৃথিবীর তুলনায় কত বড়ো?
Ans. - সূর্য পৃথিবীর তুলনায় 13 লক্ষ গুণ বড়ো।
Q.- পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির বেগ কত?
Ans. - । পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির বেগ সেকেন্ডে প্রায় 30 কিমি।
Q.- পৃথিবীর মাঝ বরাবর কোন্ রেখা রয়েছে?
Ans. - পৃথিবীর মাঝ বরাবর বিষুবরেখা বা নিরক্ষরেখা রয়েছে।
Q.- পৃথিবীর কক্ষপথ কাকে বলে?
Ans. - পৃথিবী প্রায় 15 কিলোমিটার দূর থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে পৃথিবী যে পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে তাকেই পৃথিবীর কক্ষপথ বলে।
Q.- কোন্ কোন্ ঋতুতে বন্যার সম্ভাবনা থাকে?
Ans. - বর্ষা ঋতুতে ও শরৎ ঋতুতে বন্যার সম্ভাবনা থাকে।
Q.- কোন্ কোন্ ঋতুতে ডোবা, খাল-বিল ছেঁচে মাছ ধরা হয়?
Ans. - শীত ও বসন্ত ঋতুতে ডোবা, খাল-বিল ছেঁচে মাছ ধরা হয়।
Q.- কোন্ ঋতুতে সূর্য পূর্ব আকাশের সবথেকে দক্ষিণ ঘেঁষে ওঠে?
Ans. - শীতকালে সূর্য পূর্ব আকাশের সবথেকে দক্ষিণ ঘেঁষে ওঠে।
Q.- কোন্ ঋতুতে দুপুর 12টায় ছায়ার দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি হয়?
Ans. - শীতকালে দুপুর ১২টায় ছায়ার দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি হয়।
Q.- কোন্ ঋতুতে খুব কোকিল ডাকে?
Ans. - বসন্ত ঋতুতে খুব কোকিল ডাকে।
Q.- উত্তর গোলার্ধে কোন্ ঋতুতে সবথেকে বড়ো দিন হয়?
Ans. - উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্ম ঋতুতে সবথেকে বড়ো দিন হয় ৷
Q.- 25শে ডিসেম্বর ‘বড়োদিন’-এ দক্ষিণ গোলার্ধে গরম না ঠান্ডা?
Ans. - দক্ষিণ গোলার্ধে এই সময় গরম থাকে।
Q.- বিজ্ঞানীরা আন্টার্কটিকা মহাদেশ অভিযানে ডিসেম্বর মাসে কেন যান?
Ans. - আন্টার্কটিকা দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত। ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল হয়। সূর্যের দক্ষিণায়নের ফলে সূর্যরশ্মি দক্ষিণ গোলার্ধে লম্বভাবে পড়ে ও দিন বড়ো ও রাত ছোটো হয়। গ্রীষ্মকালের সূচনা হয়। আন্টার্কটিকার বরফ এই সময় গলতে শুরু করে। আবহাওয়া কিছুটা মনোরম হয়। তাই বিজ্ঞানীরা এই সময় আন্টার্কটিকা অভিযানে যান।
Q.- জুলাই মাসে না জানুয়ারি মাসে কোন্ মাসে আমরা সূর্যের বেশি কাছে আসি ?
Ans. - জানুয়ারি মাসে আমরা সূর্যের বেশি কাছে আসি।
Q.- ঋতু পরিবর্তন কী কারণে হয় ?
Ans. - ১. পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথ। ২. পৃথিবীর অক্ষ হেলানো। ৩. আবর্তন ও পরিক্রমণ গতি।
Q.- পৃথিবীর ওপরে থাকা যেকোনো বস্তুকে পৃথিবী নিজের দিকে টানে। পৃথিবীর এই আকর্ষণশক্তিকে কী বলে লেখো ?
Ans. - মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ।
Q.- পৃথিবীর গতি কয়প্রকার ও কী কী?
Ans. - পৃথিবীর গতি দু-প্রকার। যথা—আবর্তন গতি ও পরিক্রমণ গতি।
Q.- আমাদের পৃথিবী কোন্ ছায়াপথের অন্তর্গত?
Ans. - আমাদের পৃথিবী ‘আকাশগঙ্গা' ছায়াপথের অন্তর্গত।
Q.- পৃথিবীর আকৃতি কেমন?
Ans. - পৃথিবীর আকৃতি অভিগত গোলকের মতো।
Q.- মুক্তিবেগ কাকে বলে ?
Ans. - যে গতিতে গেলে কোনো বস্তু পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ ছাড়িয়ে যেতে পারে তাকে মুক্তিবেগ (Escape
velocity) বলে। এই মুক্তিবেগের গতি প্রতি সেকেন্ডে 11.2 কিমি।
Q.- ‘চান্দ্রমাস' কী?
Ans. - পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ 27 1/3 দিনে একবার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। এই সময়কে চান্দ্রমাস বলে।
Q.- ‘বিষুব' কথার অর্থ কী?
Ans. - ‘বিষুব’ কথার অর্থ সমান দিন ও রাত্রি।
Q.- কোন্ তারিখে পৃথিবীর সর্বত্র দিন ও রাত সমান হয় ?
Ans. - 21 মার্চ ও 21 সেপ্টেম্বর তারিখে সর্বত্র দিন ও রাত সমান হয়।
Q.- সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবী কতবার নিজ অক্ষের ওপর আবর্তন করে ?
Ans. - সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবী নিজের অক্ষের ওপর ৩৬৫ বার আবর্তন করে।
Q.- কত মিনিটে । দিন বা 24 ঘণ্টা হয় ?
Ans. - 1 দিনে বা 24 ঘণ্টায় =(24X60)=1440
মিনিট হয়।
Q.- সুমেরু প্রভা ও কুমেরু প্রভা কী ?
Ans. - পৃথিবীর উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরুতে একটানা 6 মাস রাত চলাকালীন সময়ে মাঝে মাঝে আকাশে রংধনুর মতো রঙিন আলো দেখা যায়। একে অরোরা বলা হয়। বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন আয়নিত গ্যাসের সাথে সূর্যরশ্মির সংঘর্ষের ফলে মেরু অঞ্চলের আকাশে একরকম আলোর বিচ্ছুরণ দেখা যায়। একে উত্তর গোলার্ধে সুমেরু প্রভা ও দক্ষিণ গোলার্ধে কুমেরু প্রভা বলা হয়। অধিবর্ষ হবে তা কী করে বোঝা যাবে?
Q.- সূর্য পরিক্রমণকালের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দিক লেখো।
Ans. - ।(i) পৃথিবী নিজের অক্ষের ওপর 24 ঘণ্টায় । বার পাক খেতে খেতে 365 দিনে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। (ii) পৃথিবীর মেরুরেখা সর্বদা একই দিকে হেলে থাকে। (iii) পৃথিবীর
কক্ষপথের আকৃতি উপবৃত্তাকার। (iv) পৃথিবীর মেরুরেখা কক্ষতলের সাথে সর্বদা 662 ” এবং নিরক্ষীয় তল কক্ষতলের সাথে 231⁄2° কোণে হেলে অবস্থান করে। (v) পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথের নাভিতে সূর্যের অবস্থানের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ব সর্বদা সমান হয় না। দূরত্বের পার্থক্যের জন্য পরিক্রমণের বেগও পরিবর্তিত হয়। এই দূরত্ব হ্রাসবৃদ্ধির জন্যই সূর্যকে কখনও খুব বড়ো দেখায় (শীতকালে) ও কখনও ছোটো দেখায় (গ্রীষ্মকালে)। (vi) পৃথিবী সূর্যকে পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তন করে। 5. পৃথিবীর দুই মেরুতে একটানা 6 মাস
Q.- 29 ফেব্রুয়ারি তারিখটা কি প্রতি বছর ক্যালেন্ডারে পাও?
Ans. - না, প্রাত বছর পাহনা।
Q.- 29 ফেব্রুয়ারি কারো জন্মদিন হলে কী হবে ?
Ans. - এই 29 ফেব্রুয়ারি তারিখটা প্রতি বছর ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় না। প্রতি চার বছর অন্তর এই দিনটি আসে তাই কারো জন্মদিন 29 ফেব্রুয়ারি হলে সে চার বছরে একবার জন্মদিন পালন করতে পারবে।
Q.- সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ণ কাকে বলে?
Ans. - 22শে ডিসেম্বর মকরক্রান্তিতে লম্বভাবে কিরণ দেবার পর থেকে 21শে জুন পর্যন্ত পৃথিবীর উত্তর মেরু ধীরে ধীরে সূর্যের দিকে হেলতে থাকে। তাই মনে হয় সূর্য উত্তরমুখে গমন করছে। একে সূর্যের উত্তরায়ণ ও 21শে জুন থেকে 22শে ডিসেম্বর পর্যন্ত সূর্যের দক্ষিণমুখে চলনকে দক্ষিণায়ণ বলে।
Q.- 'মধ্যরাত্রির সূর্যের দেশ' কাকে বলা হয়?
Ans. - 21শে মার্চ থেকে 21শে জুন বা জুলাই পর্যন্ত কানাডা, ডেনমার্ক, আলাস্কা, নরওয়ে, সুইডেন, আইসল্যান্ড-এর অনেক জায়গা থেকে স্থানীয় সময় অনুসারে গভীর রাত্রিতে কিছু সময়ের জন্য দিগন্তরেখায় সূর্যকে দেখা যায়। নরওয়ের উত্তরে হ্যামারফেস্ট বন্দরে মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত সূর্যকে রাত্রে স্পষ্টভাবে দেখা যায় বলে একে ‘মধ্যরাত্রির সূর্যের দেশ’ বলা হয় ।
Q.- সংক্রান্তি তখন কীভাবে পালিত হত এবং এখন কীভাবে পালিত হয় ?
Ans. - বছরের সবথেকে বড়ো এবং ছোটো এই দিন দুটি প্রাচীন কালে বছর গণনা, শস্যরোপণ ইত্যাদি নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখনও আয়ারল্যান্ড, চিন ও দক্ষিণ আমেরিকায় সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রচলিত রয়েছে।
Q.- কর্কট সংক্রান্তি ও মকর সংক্রান্তির ফলাফল কী?
Ans. - 21শে জুন তারিখকে কর্কট সংক্রান্তি বলে। কারণ ওই দিন সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখায় লম্বভাবে কিরণ দেয়। তাই এই সময় উত্তর গোলার্ধে দিন বড়ো ও রাত ছোটো হয়।
22শে ডিসেম্বর তারিখকে মকর সংক্রান্তি বলে। কারণ ওই দিন সূর্য মকরক্রান্তি রেখায় লম্বভাবে কিরণ দেয়। তাই এই সময় দক্ষিণ গোলার্ধে দিন বড়ো ও রাত ছোটো হয়।
Q.- উত্তর গোলার্ধে ‘বড়োদিন’ কি আসলে ‘বড়ো দিন' ?
Ans. - বড়োদিন বা 25 ডিসেম্বর জিশুখ্রিস্টের জন্মদিন 22 ডিসেম্বর মকর সংক্রান্তির কয়েক দিন পরেই। ওই দিন আসলে কোনো বড়ো দিন নয় আসলে ওই সময় থেকেই উত্তর গোলার্ধে আবার দিন বড়ো হতে শুরু করে সেই সময় উত্তর গোলার্ধে দিন ছোটো হয়। কারণ 22 ডিসেম্বর উত্তর গোলার্ধে দিন সবথেকে ছোটো হয়।
জানো কী?
Q.- কাদের মাথায় অধিবর্ষের ব্যাপারটা প্রথম এল ?
Ans. - মিশরীয়রাই প্রথম একটি অতিরিক্ত দিন যোগ করে হিসাব ঠিক রাখার ব্যাপারটির উপায় আবিষ্কার করে।
Q.- পৃথিবীর এই আকর্ষণ বল হল -
Ans. - মাধ্যাকাষণ।
Q.- পৃথিবী তাহলে কার দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে?
Ans. - পৃথিবী সূর্যের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে।
Q.- বলো তো, দিনের কোন্ সময়টা বেশি গরম লাগে?
Ans. - দুপুরে সূর্য যখন মাথার ওপর থাকে।
Q.- গ্রীষ্ম কেন শীতের থেকে গরম?
Ans. - শীতকালের তুলনায় গ্রীষ্মকালে দিন রাতের চেয়ে বড়ো হয়। ফলে দিনের বেলায় ভূপৃষ্ঠে যে পরিমাণ তাপ জমা হয় তা ছোটো রাত হওয়ার ফলে পুরোটা বিকিরিত হতে পারে না। কিছুটা তাপ ভূপৃষ্ঠে সজ্জিত হয়ে থাকে। এর ফলে উয়তা বেড়ে গিয়ে গ্রীষ্মেকালে আবহাওয়া গরম থাকে।
Q.- এক বালতি জল দুপুর রোদে আধঘণ্টা রেখে দিলেই গরম হয়ে যায়! কেন ?
Ans. - সূর্যরশ্মি দুপুরবেলা লম্বভাবে পড়ার ফলে তা কম জায়গাকে অনেক বেশি উত্তপ্ত করে তাই এক বালতি জল গরম
হয়ে যায়।
Q.- কোন্ দিন সবথেকে ছোটো ছায়া পড়ল ?
Ans. - 21শে জুন তারিখে ছায়ার দৈর্ঘ্য সবচেয়ে ছোটো।
Q.- কোন্ দিন সবথেকে বড়ো ছায়া পড়লো ?
Ans. - 22শে ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় সবচেয়ে বড়ো ছায়া পড়ল।
Q.- পৃথিবীর অক্ষটা যদি পৃথিবীর কক্ষের ওপর লম্ব হত পৃথিবীর অক্ষ যদি কক্ষপথের সমতলে থাকত (ইউরেনাস এর অঙ্কটা এরকমই) এই দুটো ক্ষেত্রে দিনরাত ও ঋতুপরিবর্তন কেমন হত বলো তো?
Ans. - এই দুটো ক্ষেত্রেই পৃথিবীর সর্বত্র দিনরাত সমান হত ও ঋতু পরিবর্তন হত না ।
Q.- কোন্ বছরটি অধিবর্ষ হবে তা কী করে বোঝা যাবে ?
Ans. - যদি কোনো সালকে 4 দিয়ে ভাগ করে মিলে যায় তবে সেটি হবে অধিবর্ষ। কিন্তু শতবর্ষ যেমন – 1200, 1500 এগুলোকে
400 দিয়ে ভাগ করলে যদি ভাগশেষ না থাকে তবেই সেই বছর ‘অধিবর্ষ” হবে।
Q.- সূর্যের দৈনিক আপাতগতি কাকে বলে?
Ans. - পৃথিবী নিজ অক্ষের চারপাশে পশ্চিম দিক থেকে পূর্বদিকে আবর্তন করে বলে আপাতদৃষ্টিতে সূর্যকে প্রতিদিন পুব আকাশ থেকে পশ্চিম আকাশে চলাচল করছে বলে মনে হয়। এটাই সূর্যের দৈনিক আপাতগতি। সূর্যের দৈনিক আপাত গতির সময়কাল হল সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত।
Q.- শীতকালে সূর্যকে একটু বড়ো দেখায় কেন ?
Ans. - পৃথিবীর অনুসূর অবস্থানের সময় পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব কমে যায়। এই সময় সূর্য পৃথিবীর কাছে চলে আসে এবং উত্তর গোলার্ধে শীতকালে সূর্যকে একটু বড়ো দেখায়।
Q.- কোথায় ও কখন একটানা রাত হয়?
Ans. - মার্চ থেকে জুন এই সময়ে কুমেরুবৃত্তীয় অঞ্চলে অন্ধকার দিন সহ একটানা রাত হয়। সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি সুমেবৃত্তীয় অঞ্চলে 24 ঘণ্টাই অন্ধকার থাকে।
Q.- পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তি না থাকলে কী হত?
Ans. - পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তি না থাকলে পৃথিবীতে বাতাস, জল, মানুষ, জীবজন্তু, গাছপালা কোনো কিছুই স্থির থাকত না সবই মহাশূন্যে বিলীন হয়ে যেত। জীবজগতের অস্তিত্ব না থাকায় পৃথিবী প্রাণহীন গ্রহে পরিণত হত।
Q.- পৃথিবীর কোথায় সারাবছরই দিনরাত সমান থাকে?
Ans. - পৃথিবীর নিরক্ষীয় অঞ্চলে সারাবছরই দিনরাত সমান থাকে।
Q.- ২১ মার্চ তারিখে স্থানীয় সময় অনুযায়ী ক-টার সময় টোকিয়ো, কলকাতা, সিডনিতে সূর্য উঠবে?
Ans. - ২১ মার্চ তারিখে স্থানীয় সময় অনুযায়ী এই তিন জায়গায় ভোর ৫টার সময় সূর্য উঠবে।
Q.- ৪ জুলাই, ২৫ জানুয়ারি, ২০ সেপ্টেম্বর বিষুবরেখার যে-কোনো জায়গায় কখন সূর্য উঠবে ?
Ans. - ৪ঠা জুলাই, ২৫শে জানুয়ারি, ২০ সেপ্টেম্বর বিষুবরেখার যে-কোনো জায়গায় একই সময়ে সূর্য উঠবে।
Q.- ২৩ ডিসেম্বর স্থানীয় সময়ে কটার সময় নিউইয়র্ক, দিল্লি, কায়রোতে সূর্য ডুববে?
Ans. - ২৩ ডিসেম্বর ৫টার সময় এই তিন জায়গায় একই সময়ে সূর্য ডুববে।
Q.- কোন্ তারিখকে কর্কট সংক্রান্তি বলে ?
Ans. - 21 জুন।
Q.- কোন্ তারিখকে মকর সংক্রান্তি বলে ?
Ans. - 22 ডিসেম্বর।
Q.- উত্তর মেরুবৃত্তের মান কত?
Ans. – 66.50
Q.- বসন্তকালীন বিষুব কাকে বলে?
Ans. - ২১ মার্চকে
Q.- শরৎকালীন বিষুব কাকে বলে ?
Ans. - 23 সেপ্টেম্বরকে।
Q.- সূর্যের দক্ষিণমুখী আপাতগতিকে কী বলে?
Ans. - দক্ষিণায়ণ।
Q.- মহাবিষুব কোন্ দিনকে বলে?
Ans. - 21 মার্চ দিনটিকে মহাবিষুব বলে।
Q.- জলবিষুব কোন্ দিনকে বলে?
Ans. - 23 সেপ্টেম্বর দিনটিকে জলবিষুব বলে।
Q.- মধ্যরাত্রির সূর্যের দেশ কাকে বলে?
Ans. - নরওয়ের হ্যামারফেস্ট শহরকে মধ্যরাত্রির সূর্যের দেশ বলে।
Q.- কক্ষতল কাকে বলে?
Ans. - পৃথিবীর কক্ষপথ মহাশূন্যে যে কাল্পনিক সমতলে অবস্থিত তাকেই কক্ষতল বলা হয় ।
Q.- আমাদের দেশ পৃথিবীর কোথায় অবস্থিত?
Ans. - আমাদের দেশ নিরক্ষবৃত্ত এবং উত্তরমেরুর মাঝের অঞ্চল অর্থাৎ উত্তর মেরুতে রয়েছে।
Q.- পৃথিবীর মেরু কাকে বলে ?
Ans. - পৃথিবীর যে দুটি প্রান্তে কল্পিত অক্ষদণ্ডটি বেরিয়ে থাকার কথা, পৃথিবীর সেই প্রান্ত দুটিকে
মেরু বলা হয়।
Q.- পৃথিবীর অক্ষের অবস্থান হেলানো কেন?
Ans. - বিজ্ঞানীদের ধারণা পৃথিবী সৃষ্টির সময়থেকে বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তুর সঙ্গে সংঘাতের কারণেই পৃথিবীর অক্ষের এমন হেলানো অবস্থান হয়েছে।
Q.- সৌরদিন কাকে বলে ?
Ans. - পৃথিবী নিজের মেরুদণ্ডের উপর একবার পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তন করতে সময় নেয় 24 ঘণ্টা বা একদিন । একে সৌরদিন বলে।
Q.- ‘সৌর বছর’ কাকে বলে ?
Ans. - পৃথিবী নিজ মেরুরেখা আবর্তন করতে করতে সূর্যকে প্রায় 365 দিনে একবার প্রদক্ষিণ করে। এই সময়টাকে এক সৌর বছর বলে।
Q.- আবর্তন বলতে কী বোঝ ?
Ans. - পৃথিবী সূর্যকে সামনে রেখে নিজের মেরুরেখার ওপর পশ্চিম থেকে পূর্বে 24 ঘণ্টায় একবার পূর্ণ আবর্তন করে। একে পৃথিবীর আবর্তন গতি বলে। এই আবর্তন বা আহ্নিক গতির ফলে দিনরাত্রি হয়।
Q.- বার্ষিক গতি বা পরিক্রমণ গতি কাকে বলে? এর ফলাফল লেখো।
Ans. - পৃথিবী তার নিজের মেরুরেখার উপর ঘুরতে ঘুরতে তার নিজের উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে। পৃথিবীর এই গতিকে বার্ষিক গতি বা পরিক্রমণ গতি বলে। এই গতির ফলে ঋতুপরিবর্তন হয় ও দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধি ঘটে।
Q.- কোন্ বিজ্ঞানী গ্রহদের গতি সংক্রান্ত সূত্র আবিষ্কার করেন?
Ans. - বিজ্ঞানী কেপলার প্রথম গ্রহদের গতি সংক্রান্ত তিনটি সূত্র আবিষ্কার করেন। কেপলারের প্রথম সূত্রটি হল “প্রতিটি গ্রহ উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে ৪ঠা জুলাই প্রদক্ষিণ করে এবং সূর্য ও উপবৃত্তের একটি ফোকাসে থাকে।”
Q.- পৃথিবীর অপসূর অবস্থান কাকে বলে?
Ans. - পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথের নাভিতে সূর্যের অবস্থান জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পৃথিবী সূর্য থেকে ক্রমশ দূরে সরে যেতে থাকে। তাই পরিক্রমণকালে পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ব সর্বত্র সমান হয় না। 4ঠা জুলাই তারিখে পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ব সবচেয়ে বেশি হয়, প্রায় 15 কোটি 20 লক্ষ কিমি। একে পৃথিবীর অপসুর অবস্থান বলে।
Q.- পৃথিবীর অনুসূর অবস্থান কাকে বলে?
Ans. - ওরা জানুয়ারি সূর্য ও পৃথিবীর দূরত্ব সবচেয়ে কম হয়, প্রায় 14 কোটি 70 লক্ষ কিমি। এই দিনটিকে পৃথিবীর অনুসূর অবস্থান (Aphelion clerihelion) বলে।
Q.- অধিবর্ষ বা লিপইয়ার কাকে বলে? এটি কীভাবে নির্ণয় করা হয় ?
Ans. - পৃথিবীর একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে সময় লাগে 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড। কিন্তু হিসাবের সুবিধার জন্য 365 দিনে একবছর ধরা হয়। তাই প্রতিবছর এই 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড বা 6 ঘণ্টা সময় বাড়তি থেকে যায়। এই বাড়তি সময়ের হিসাব রাখতে প্রতি 4 বছর অন্তর 1 টা পুরো দিন 6 ঘন্টা x 4 বছর = 24 ঘন্টা যোগ করা হয় । ওই একদিন ফেব্রুয়ারি মাসের সাথে যোগ করে (28+1) = 29 দিন করা হয়। তাই ওই বছরটা 366 দিনের হয়। 366 দিনের বছরকে বলে অধিবর্ষ বা লিপইয়ার ।
Q.- রবিমার্গ বা সূর্যের আপাত বার্ষিক গতি বলতে কী বোঝ ?
Ans. - পৃথিবী তার কক্ষতলের সাথে 66 ! কোণে হেলে অবস্থান করে। সেই কারণে পৃথিবীর বিষুবরেখা, কর্কটক্রান্তি রেখা ও মকরক্রান্তি রেখায় সূর্যরশ্মি কখনও লম্বভাবে ও কখনও তির্যকভাবে পড়ে। তাই আপাতভাবে মনে হয় যে সূর্য পৃথিবীর বিষুবরেখা থেকে উত্তরে কর্কটক্রান্তি রেখা পর্যন্ত এবং দক্ষিণে মকরক্রান্তি রেখা পর্যন্ত চলাচল করে। একেই সূর্যের আপাত বার্ষিক গতি বা রবিমার্গ বলে।
দিন
Q.- পৃথিবীর এক একটা গোলার্ধ সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে কেন?
Ans. - পৃথিবীর নিজ অক্ষে ঘোরার সময় উপবৃত্তাকার পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবীর অক্ষটি কক্ষপথের সাপেক্ষে পুরোপুরি লম্ব নয়। কিছুটা হেলানো, কক্ষতলের 661⁄2° কোণে অবস্থিত। তাই পৃথিবীও কিছুটা হেলানোভাবে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। তাই কক্ষপথের এক একটা জায়গায় পৃথিবীর এক একটা গোলার্ধ সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে।
Q.- ঋতুবৈচিত্রের গুরুত্ব বুঝিয়ে লেখো।
Ans. - ঋতুবৈচিত্র্য প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সময় গণনা, ক্যালেন্ডার তৈরি, কৃষিকাজ, নানান জীবিকা, বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব সবই ঋতুনির্ভর। উদ্ভিদ ও প্রাণীর সঠিক বৃদ্ধি ও বিকাশ এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্যের জন্য ঋতু পরিবর্তন জরুরি। সারা বছর ধরে ঋতুগুলির এই আসা যাওয়া আমাদের জীবনে বৈচিত্র্য ও উৎসাহ নিয়ে আসে, যা আমাদের সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করে।
(1) সৌর বছর কাকে বলে?
উত্তর – পৃথিবীর কক্ষপথ উপবৃত্তাকার। এই কক্ষপথের পরিধি প্রায় 96 মিলিয়ন কিমি। পৃথিবী সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে 365 দিন, 5 ঘন্টা, 48 মিনিট এবং 46 সেকেন্ড সময় নেয়। এই নির্দিষ্ট সময়কে সৌর বছর বলা হয়।
(2) কোন ঋতুতে সবচেয়ে বেশি দিন নীল আকাশ দেখা যায়?
উত্তর - আমরা জানি, পৃথিবীতে প্রধানত চারটি ঋতু রয়েছে - গ্রীষ্ম, শরৎ, শীত এবং বসন্ত। নীল আকাশ বেশিরভাগ দিন শরৎ এবং বসন্তে দেখা যায়।
(3) ঋতু পরিবর্তন কি?
উত্তর - সূর্যালোকের আপতন কোণের পার্থক্যের কারণে বছরের বিভিন্ন সময়ে শীত ও গ্রীষ্মের মধ্যে সৌর বিকিরণের পার্থক্য অনুসারে একটি বছরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। একটি অংশকে ঋতু বলা হয় এবং শীত ও গ্রীষ্মের এই পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনকে বলা হয় ঋতু পরিবর্তন।
(4) কোন ঋতুতে মাঠের মাটি ভেঙ্গে যায়?
উত্তর - গ্রীষ্মকালে (মে থেকে জুলাই) সূর্যের রশ্মি লম্বভাবে পড়ে। কারণ, ওই তিন মাসে পৃথিবী তার কক্ষপথে এমনভাবে অবস্থান করে যাতে উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে। তখন মাঠের মাটি ফেটে যায়
(5) অধিবর্ষ কাকে বলে?
উত্তর - একটি বছর 365 দিনে পরিমাপ করা হয়। কিন্তু পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে 365 দিন, 5 ঘন্টা, 48 মিনিট এবং 46 সেকেন্ড সময় নেয়। তাই বাকি ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড বা ৬ ঘণ্টা বাড়তি থাকে। এই কারণে, প্রতি 4 বছরে (6 ঘন্টা × 4 24 ঘন্টা বা 1 দিন) একটি ফেব্রুয়ারি দিন যোগ করে এই ত্রুটিটি সংশোধন করা হয়। যদি বছরের সংখ্যাগুলি 4 দ্বারা বিভাজ্য হয় বা শতবর্ষগুলিকে 400 দ্বারা ভাগ করা হয়, তাহলে সেই বছরের ফেব্রুয়ারি একদিন বৃদ্ধি পাবে (অর্থাৎ 28 + 1 = 29
দিন)। তাই এ বছরকে অধিবর্ষ বলা হয়।
(6) কোন্ ঋতুতে পুকুরগুলি জলে ভরতি থাকে?
উত্তর - গ্রীষ্মের শেষভাগে ও শরতের প্রথম ভাগে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এই সময়কে বলে বর্ষাকাল। বর্ষাকলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ার জন্য পুকুরগুলি জলে ভরতি থাকে
(7) অধিবর্ষের বিষয়টি কাদের মাথায় প্রথম এলো ?
উত্তর - আফ্রিকা মহাদেশের অন্তর্গত ইজিপ্ট বা মিশর রাজ্যের অধিবাসী বা মিশরীয়রা প্রথম একটি অতিরিক্ত দিন যোগ করে হিসাব ঠিক রাখার উপায় আবিষ্কার করে।
(8) কোন্ কোন্ ঋতুতে বন্যার সম্ভাবনা থাকে?
উত্তর - বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাতের পর নদীগুলি ফুলে ফেঁপে ওঠে। ফলে বন্যার সম্ভাবনা দেখা যায়। শরৎকালেও বন্যার সম্ভাবনা লক্ষ করা যায়।
(9) অপসূর অবস্থান ও অনুসূর অবস্থান কাকে বলে?
উত্তর - পৃথিবীর কক্ষপথ একটি উপবৃত্তাকার বলে সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব সারাবছর সমান থাকে না। ৪ জুলাই সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি থাকে, প্রায় ১৫ কোটি ২০ লক্ষ কিমি। কক্ষপথে এই অবস্থানকে পৃথিবীর অপসূর অবস্থান বলে। আর, ৩ জানুয়ারি সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম থাকে, প্রায় ১৪ কোটি ৭০ লক্ষ কিমি। কক্ষপথে এই অবস্থানকে পৃথিবীর অনুসূর অবস্থান বলে।
(10) কোন কোন ঋতুতে ডোবা, খাল, বিল ছেঁচে মাছ ধরা হয় ?
উত্তর - প্রধানত শীতকালে ডোবা, খাল, বিল ছেঁচে মাছ ধরা হয়। এ ছাড়া শরৎকালে, হেমন্তকালেও ডোবা, খাল, বিল ছেঁচে মাছ ধরা হয়।
(11) ঋতু কয়টি ও কী কী ?
উত্তর - আমাদের দেশে ঋতু ছয়টি। কিন্তু সমগ্র পৃথিবীতে প্রধানত চারটি ঋতু লক্ষ করা যায়। যেমন : গ্রীষ্ম, শরৎ, শীত ও বসন্ত। তবে আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালের পরেই ও শরতের প্রথমভাগে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আসে বর্ষাকাল আর শরৎকালের পরে ও শীতকালের শুরুতে অল্প কিছুদিনের জন্য হেমন্তকাল আসে। ছটি ঋতুর মধ্যে গ্রীষ্ম, বর্ষা ও শীতকাল আমাদের দেশে অন্য ঋতুগুলির চেয়ে অনেক বেশিদিন বিরাজ করে।
(12) কোন ঋতুতে সূর্য পূর্ব আকাশের সবথেকে দক্ষিণ ঘেঁষে ওঠে?
উত্তর - দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে ২২ ডিসেম্বর পৃথিবী কক্ষপথের এমন স্থানে আসে যে, সেখানে সূর্য লম্বভাবে পতিত হয়। তখন দক্ষিণ গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড়ো ও উত্তর গোলার্ধে দিন সবচেয়ে ছোটো হয়। তাই সূর্য ২২ ডিসেম্বর দক্ষিণায়নের সময় পূর্ব আকাশের সবথেকে দক্ষিণ ঘেঁষে ওঠে।
(13) কোন্ ঋতুতে দুপুর ১২টায় ছায়ার দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি হয়?
উত্তর - শীতকালে।
(14) কোন ঋতুতে খুব কোকিল ডাকে?
উত্তর - বসন্তকালে কোকিল খুব ডাকে। কারণ বসন্তকালের আবহাওয়া থাকে প্রীতিদায়ক।
(15) উত্তর গোলার্ধে কোন্ ঋতুতে সবথেকে বড়ো দিন হয় ?
উত্তর - উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে। ২১ জুন উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে। তখন উত্তর গোলার্ধে ক্রমশ দিনগুলি বড়ো হতে থাকে।
(16) জুলাই না জানুয়ারি কোন্ মাসে আমরা সূর্যের বেশি কাছে আসি ?
উত্তর - পৃথিবী উপবৃত্তাকার কক্ষতলে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে বলে বছরের বিভিন্ন সময়ে সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্বের তারতম্য লক্ষ করা যায়। ৪ জুলাই সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব বেশি হয়—১৫ কোটি ২০ লক্ষ কিমি। একে পৃথিবীর অপসূর অবস্থান বলে। আবার, ৩ জানুয়ারি এই দূরত্ব হ্রাস পেয়ে ১৪ কোটি ৭০ লক্ষ কিমিতে দাঁড়ায়। একে পৃথিবীর অনুসূর অবস্থান বলে। এ থেকে স্পষ্টই বলা যায়, জানুয়ারি মাসে আমরা সূর্যের বেশি কাছে আসি।
(17) মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কাকে বলে ?
উত্তর - পৃথিবীর ওপর থাকা কোনো জিনিস পৃথিবীর আকর্ষণের টানে নীচের দিকে পড়ে। এই জন্যই আমরা পৃথিবী থেকে ছিটকে যাই না, পৃথিবীর ওপরেই থাকি। পৃথিবীর এই আকর্ষণ শক্তিকে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বলে।
(17) সূর্যঘড়ি থেকে কীভাবে সময় বলা যাবে ?
উত্তর - সূর্য ঘড়ি তৈরি করতে হলে সমতল জায়গায় একটা সাদা কাগজ মাটিতে বিছোতে হবে। একটা লম্বা কাঠি কাগজের ঠিক মাঝখানে খাড়া করে পুঁততে হবে। সূর্য ভালোভাবে উঠালে লাঠির ছায়াটাকে লক্ষ করতে হবে। এবার পেনসিল দিয়ে কিছুক্ষণ পরপর ছায়া বরাবর দাগ টানতে হবে। দাগগুলির পাশে পাশে ঘড়ি দেখে সময়টা লিখে রাখতে হবে। এবার দেখা যাবে, দিনের যে-কোনো সময় ওই সূর্যঘড়ি দেখে সময়ে বলে দেওয়া যাবে।
(18) মেরু ও নিরক্ষীয় অঞ্চলে ঋতুপরিবর্তন না হওয়ার কারণ কী ?
উত্তর - সূর্যরশ্মির পতন কোণের পার্থক্য ও উত্তাপের অসম বণ্টনের জন্য মেরু অঞ্চলে শুষ্ক-শীতল শীতকাল বিরাজ করে। এর কারণ, মেরু অঞ্চলে সূর্যরশ্মি সবসময় সবচেয়ে বেশি তির্যকভাবে পড়ে। তাই প্রচণ্ড গরমের সূচনা হয় না। ফলে শীত কখনো কম, কখনো বেশি অনুভূত হয়। কিন্তু বছরের প্রতিটি দিনেই নিরক্ষরেখার ওপর ১২ ঘণ্টা দিন ও ১২ ঘণ্টা রাত হয়। এই কারণেই নিরক্ষীয় অঞ্চলে কখনোই ঋতুপরিবর্তন হয় না।
(19) মহাকর্ষ কাকে বলে ?
উত্তর - সব বস্তুই পরস্পর পরস্পরকে আকর্ষণ করে বা নিজের দিকে টানে। এই টানাটানির ফলে, যার ভর বেশি, আর যে যত কাছে আছে, তার আকর্ষণ শক্তি তত বেশি হয়। একে মহাকর্ষ বলে।
(20) মকরসংক্রান্তি বলতে কী বোঝো?
উত্তর - দক্ষিণ গোলার্ধে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে বলে দক্ষিণ গোলার্ধে দিন বড়ো ও রাত ছোটো হয়। এভাবে চলতে চলতে ২২ ডিসেম্বর তারিখে সূর্যরশ্মি মকরক্রান্তি রেখার (২৩২ দঃ) ওপর ঠিক লম্বভাবে পড়ে। ওই দিনটি সূর্যের দক্ষিণায়নের শেষ সীমায় থাকে। ওই দিনকে মকরসংক্রান্তি
(Winter Solstice) বা দক্ষিণ অয়নান্ত দিবস বলে।
(21) অক্ষ কাকে বলে ?
উত্তর - পৃথিবী সূর্যের চারদিকে লাট্টুর মতো পাক খেতে খেতে ঘোরে। যে কল্পিত রেখার চারদিকে পৃথিবী আবর্তন করে, তাকে পৃথিবীর অক্ষ (Earth's
Axis) বলে।
(22) পৃথিবীর কক্ষ, কক্ষপথ ও কক্ষতল কাকে বলে ?
উত্তর - যে নির্দিষ্ট পথ ধরে পৃথিবী নিজের অক্ষের চারদিকে ঘুরতে ঘুরতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে সেই নির্দিষ্ট পথকে পৃথিবীর কক্ষ বা কক্ষপথ (Orbit) বলে। আর পৃথিবীর এই কক্ষপথটি যে সমতলে আছে, তাকে পৃথিবীর কক্ষতল (Earth's
Orbital Plane) বলে। পৃথিবীর কেন্দ্র এবং সূর্যের কেন্দ্র একই কক্ষতলে অবস্থিত।
(23) মহাবিষুব বলতে কী বোঝো?
উত্তর - ২২ ডিসেম্বরের পর থেকে পৃথিবী তার পরিক্রমণ পথে চলতে চলতে এমন এক জায়গায় এসে উপস্থিত হয়, যেখানে পৃথিবীর দুই মেরু সূর্য থেকে সমান দূরত্বে অবস্থান করে। সূর্যকিরণ তখন লম্বভাবে বিষুবরেখার ওপর পড়ে। ২১ মার্চ পৃথিবীর সর্বত্র দিনরাত সমান হয় বলে ওই দিনটিকে উত্তর গোলার্ধে মহাবিষুব বলে।
(24) পৃথিবীর কক্ষপথের আকৃতি কীরকম?
উত্তর - বিশাল পৃথিবীর কক্ষপথ একটি উপবৃত্তের
(Ellipse) মতো অর্থাৎ ডিম্বাকৃতি। একে উপবৃত্তাকার কক্ষপথ (Elliptical
Orbit) বলে। সূর্য এই উপবৃত্তের কেন্দ্রে অর্থাৎ নাভিতে (Focus) অবস্থিত। পৃথিবী নিজের কক্ষতলে 66.5° কোণে হেলে থাকে।
(25) বিজ্ঞানীরা আন্টার্কটিকা মহাদেশ অভিযানে ডিসেম্বর মাসে কেন যান ?
উত্তর - পৃথিবী নিজ কক্ষপথে সূর্যের চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে এমনভাবে অবস্থান করে যে, একসময় দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকে থাকে। ফলে দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল হয়। বিশাল আন্টর্কটিকা মহাদেশ দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত। এটি সম্পূর্ণ বরফাবৃত। সারাবছর তীব্র ঠান্ডা ও বরফাবৃত অবস্থায় থাকলেও গ্রীষ্মকালে গরম অবস্থা লক্ষ করা যায়। আর অনেক স্থান বরফমুক্ত হয়ে যায়। গ্রীষ্মকাল হওয়ায় ভাসমান হিমশৈলের পরিমাণ অনেকটা কম হয় এবং যাতায়াতের অনেক সুবিধা হয়। তাই বিজ্ঞানীরা ডিসেম্বর মাসে প্রীতিদায়ক আবহাওয়ায় আন্টার্কটিকা অভিযানে যান।
(26) বিষুব কাকে বলে ?
উত্তর - যে তারিখে দিনরাত সমান হয়, তাকে বিষুব বলে। ২৩ সেপ্টেম্বর দিনরাত সমান হয়। একে উত্তর গোলার্ধে বলে শরৎকালীন বিষুব বা জলবিষুব। ২১ মার্চ উত্তর গোলার্ধে দিনরাত সমান হয়। একে উত্তর গোলার্ধে মহাবিষুব বা বসন্তকালীন বিষুব বলে। এই দুদিন সূর্যরশ্মি নিরক্ষরেখার ওপর লম্বভাবে পতিত হয়।
(27) সমস্ত জীবজগৎ সূর্যের ওপর নির্ভরশীল কেন ?
উত্তর - সূর্যই সকল প্রাণশক্তির উৎস। সূর্য তাই জীবনের উৎস। সূর্যের আলো ও উত্তাপ ছাড়া বীজ অঙ্কুরিত হয় না, গাছপালা পল্লবিত হয় না। মানুষও সূর্যের দ্বারা প্রভাবিত। এই কারণে সমস্ত জীবজগৎ সূর্যের ওপর নির্ভরশীল।
(28) জলবিষুব বলতে কী বোঝো?
উত্তর - সূর্যরশ্মি ২৩ সেপ্টেম্বর নিরক্ষরেখার ওপর লম্বভাবে অবস্থান করে। এই তারিখে পৃথিবীর সর্বত্র দিনরাত সমান হয়। লম্বভাবে পতিত রশ্মি ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগকে উত্তপ্ত করে তোলে এবং ওই তাপ রাতেরবেলায় পুরোপুরি বিকীর্ণ হওয়ার সুযোগ পায়। ফলে দিনরাত সমান পরিমাণে থাকে। এই দিনটিকে উত্তর গোলার্ধে জলবিষুব বলে।
(29) উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ন কাকে বলে?
উত্তর - ‘অয়ন’ শব্দের অর্থ পথ বা গতি। ২১ জুন ২৩.5° উত্তর অক্ষাংশের খ-মধ্য থেকে ২২ ডিসেম্বর ২৩ দক্ষিণ অক্ষাংশের খ-মধ্য পর্যন্ত সূর্যের দক্ষিণ অভিমুখী আপাত বার্ষিক গতিকে দক্ষিণায়ন বলে। আর ২২ ডিসেম্বর ২৩ দক্ষিণ অক্ষাংশের খ-মধ্য থেকে ২১ জুন ২৩.5° উত্তর অক্ষাংশের খ-মধ্য পর্যন্ত সূর্যের উত্তর অভিমুখী আপাত বার্ষিক গতিকে উত্তরায়ণ বলে। (খ-মধ্য বলতে বোঝায় আকাশকে। আকাশের মাঝখানের কোনো একটি স্থানের (শীর্ষবিন্দু) ঠিক নীচে অবস্থিত স্থানটিকে খ-মধ্য বলে।
(30) মেরুপ্রভা কাকে বলে ?
উত্তর - পৃথিবীর উত্তরে সুমেরুবৃত্ত ও দক্ষিণ কুমেরুবৃত্তের মধ্যে একটানা ৬ মাস বা ১৭৯ দিন বা রাত থাকে। সেইসময় ওখানকার রাতের আকাশে মাঝে মাঝে রামধনুর মতো এক অপূর্ব মৃদু আলোর জ্যোতি (Aurora) দেখা যায়। উত্তর মেরুতে এই জ্যোতিকে সুমেরু প্রভা এবং দক্ষিণ মেরুতে এই জ্যোতিকে কুমেরু প্রভা বলে। বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন আয়নিত গ্যাসের সঙ্গে সূর্যরশ্মির সংঘর্ষের ফলে মেরু অঞ্চলের আকাশে এর কম বিচ্ছুরিত আলোর সৃষ্টি হয়।
(31) রবিমার্গ কাকে বলে ?
উত্তর - কক্ষতলের সঙ্গে 66.5° কোণে হেলে পৃথিবীর অবস্থান, পৃথিবীর কক্ষপথ পরিক্রমা এবং ভিন্ন সময়ে গতিশীল পৃথিবী থেকে সূর্যকে নানা উচ্চতায় দেখা যায়। এর ফলে সূর্যের এই যে অবস্থান তা উত্তরে 23.5° উত্তর অক্ষরেখা থেকে 23.5° দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ। সূর্যের এই বার্ষিক আপাত গতিশীলতাকে সূর্যের বার্ষিক আপাতগতি বা রবিমার্গ বলে। (রবি = সূর্য, মার্গ = পথ)
(32) ২৫ ডিসেম্বর ‘বড়োদিন'-এ দক্ষিণ গোলার্ধে গরম না ঠান্ডা ?
উত্তর - বড়ো দিন বা খ্রিস্টমাস উৎসব পালিত হয় ২৫ ডিসেম্বর। এই সময় দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে। সূর্যরশ্মি দক্ষিণ গোলার্ধে পড়ে অনেক লম্বভাবে। তাই সেখানে সূর্যের তাপও হয় প্রবল ফলে প্রচণ্ড গরম হয়।
(33) কর্কটসংক্রান্তি বলতে কী বোঝো?
উত্তর - ২১ জুন সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখার (২৩২) ওপর লম্বভাবে অবস্থান করে বলে ওই দিনে উত্তর গোলার্ধে দিন সবথেকে বড়ো ও রাত সবথেকে ছোটো হয়। পৃথিবী এই উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ন শেষ ও শুরু হওয়ার মধ্যে অল্প সময় অবস্থান করে বলে ওই দিনটিকে কর্কটসংক্রান্তি
(Summer Solstice) বা উত্তর অয়নান্ত দিবস বলে।
<< Read More >>
Class 7 All Subject Solution >>