পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে (Pahariya Barshar Sure) অনুশীলনী প্রশ্ন উত্তর | Class 5 | Chapter 8 | WBBSE
পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে
কবিতার প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা :
১. নিজের ভাষায় লেখো :
১.১ পশ্চিমবঙ্গের যে-কোনো একটি পাহাড়ের নাম লেখো ।
উত্তর : পশ্চিমবঙ্গের একটি পাহাড়ের নাম হল পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়/ বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড় ।
১.২ পাহাড়ের কথা বললেই কোন ছবি তোমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে ?
উত্তর : পাহাড়ের কথা বললেই আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য । একপাশে জঙ্গলে ঢাকা উঁচু উঁচু পাহাড় আর একপাশে গভীর খাদ । এরই মাঝখান দিয়ে চলেছে সরু পাহাড়ি রাস্তা । পাহাড়ের গা বেয়ে বয়ে চলেছে খরস্রোতা নদী, কোথাও আবার সেই নদী থেকে জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়েছে ।
১.৪ বর্ষায় প্রকৃতির রূপ কেমন হয় ? তোমার পাঠ্যবইতে বর্ষা নিয়ে আর কোন কোন লেখা রয়েছে ?
উত্তর : বর্ষায় প্রকৃতি এক অপরূপ রূপে সেজে ওঠে । গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহের পর যখন বর্ষা আসে প্রকৃতি তখন হয়ে ওঠে সজল, স্নিগ্ধ । বর্ষার জলধারায় গাছপালা সতেজ ও সবুজ হয়ে ওঠে । নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর, জলাশয় সব জলে ভরে ওঠে । বর্ষায় আকাশ বেশির ভাগ সময় ঘন কালো মেঘে ঢেকে থাকে । মাঝে মাঝে বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রচন্ড বৃষ্টি হয় । সন্ধ্যেবেলায় ব্যাঙের ডাক শোনা যায় ।
বর্ষা নিয়ে আমার পাঠ্যবইতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর’ কবিতা, ও লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘তালনবমী’ গল্প রয়েছে ।
২. বাক্য মেলাও :
উত্তর :
ক | খ |
চল মাছ ধরি গিয়ে | নতুন বছরের নতুন জলে |
মাছরাঙা বার বার | ছোঁ মেরেও পায়নি মাছ |
কুরুয়া পাখি | উড়ে উড়ে কাঁদছে |
বকেরা | উড়ছে সার বেঁধে |
ছাপিয়ে গিয়েছে | নদীর কূল |
৩. প্রদত্ত সূত্র অনুসারে গানটি থেকে গল্প তৈরি করো :
উত্তর :
নতুন বছরের নতুন জলে আনন্দ করে মাছ ধরতে যাই চল । বর্ষায় এই সুন্দর প্রকৃতিতে নদীর কূল ছাপিয়ে মাঠ ঘাট জলে থৈ থৈ করছে । মাঠে ঘাটে, কত পাখি, যেমন বক, মাছরাঙা, কুরুয়া তারা কেউ সার বেঁধে উড়ছে, কেউ মাছের আশায় বার বার জলে ছোঁ মারছে আর কেউ উড়ে উড়ে কাঁদছে । একদিকে মাছ না পাওয়া গেলে অন্যদিকে চল ।
৬. একটি বৃষ্টির দিনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি লেখো ।
শ্রীপুর কামারপুকুর
প্রিয় দেব,
অন্যদিন কামারপুকুরে বৃষ্টির দিন ছিল। গতকাল বিছানা থেকে উঠে দেখি ভোরে আকাশ মেঘে কালো হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে বজ্রপাতের ঝলকানি এবং বধির বজ্রপাত ছিল। কিছুক্ষণ পর প্রবল বৃষ্টি শুরু হলো। অন্তত চার ঘণ্টা একটানা বৃষ্টি হয়েছে। আমি আমার রুমে একই ভোগ. রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। অধিকাংশ যানবাহন থেমে গিয়েছিল। রাস্তায় শুধু ডাবল ডেকার বাস চলছিল, সব জায়গায় জলের ছিটা। হাঁটু-গভীর জলে, উরু পর্যন্ত জামাকাপড় এবং হাতে জুতা নিয়ে লোকেরা তাদের গন্তব্যে চলেছিল। কিছু বড় লোক তাদের মাথায় ঝুড়িতে বৃদ্ধ পুরুষ ও মহিলাদের বহন করেছিল। তারা তাদের ঝুড়িতে ছেলে-মেয়েদেরও বহন করত। আমি আনন্দের সাথে দৃশ্যটি উপভোগ করেছি এবং একই সাথে বুঝলাম প্রবল বৃষ্টির কারণে সাধারণ মানুষকে যে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। ভালবাসার সাথে, সবসময়
তোমার,
নিখিল
৮. কথায় বলে ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ । সেই বাঙালির পরিচয় গানটিতে কীভাবে ফুটে উঠেছে ?
উত্তর : বাঙালির প্রিয় খাদ্য হল মাছ ভাত । বাঙালিরা মাছ ধরতেও খুব ভালোবাসে । ‘পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে’ গল্পে যে গানের কথা বলা হয়েছে সেখানেও রাভা জনগোষ্ঠীর মানুষরা মাছ ধরতে যাচ্ছে । নতুন বছরে বর্ষার নতুন জলে যখন নদীর কূল ছাপিয়ে মাঠ ঘাট জলে থৈ থৈ করছে তখন তারা একসঙ্গে মাছ ধরতে চলেছে । একস্থানে মাছ না পাওয়া গেলে তারা অন্যস্থানে যেতেও রাজি । গল্পে উল্লেখ্য গানটির মাধ্যমে তাদের মাছ খেতে ভালো লাগার কথা ফুটে উঠেছে । বাঙালিরাও মাছ খেতে ভালোবাসে, তাদের যে কোনও আনন্দ অনুষ্ঠানের অঙ্গই হল মাছ । সেই মাছ প্রিয় বাঙালির পরিচয়ও গানটিতে কিছুটা হলেও ফুটে উঠেছে ।
৮.১ বৃষ্টি কীভাবে প্রকৃতিকে বাঁচায় ?
উত্তর : বৃষ্টি হল প্রকৃতিতে জলের অন্যতম প্রধান উৎস । জল ছাড়া জীবজগতের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না । বৃষ্টি না হলে প্রকৃতিতে খরা দেখা দেবে । বৃষ্টির জলে গাছপালা বেড়ে ওঠে, মাঠে ফসল ফলে । আর এই গাছপালার উপর নির্ভর করে সমস্ত প্রাণীজগৎ বেঁচে থাকে । বৃষ্টি না হলে সমস্ত উদ্ভিদকূল ও প্রাণীকূলই ধ্বংস হয়ে যাবে । এইভাবে বৃষ্টি প্রকৃতিকে বাঁচায় ।
৮.২ ‘খরা’ বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর : খরা বলতে বোঝায় অনাবৃষ্টি । দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় জলের অভাবে মাটি, পুকুর, খাল-বিল, জলাশয় সব শুকিয়ে যায় । সূর্যের প্রচন্ড তাপে গাছপালা, পশুপাখি, মানুষ মারা যায় । চারিদিকে জলকষ্ট দেখা দেয় । এই অবস্থাকে খরা বলে ।
৮.৩ অনাবৃষ্টির ফলে মানুষ, পশুপাখি, গাছপালার অবস্থা কেমন হয়েছিল ?
উত্তর : ‘পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে’ গল্পে অনাবৃষ্টির ফলে মানুষ, পশুপাখি, গাছপালা সব ধ্বংস হয়ে গেছিল ।
৮.৪ ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছে ব্যাঙ কী দেখল ?
উত্তর : ‘পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে’ গল্পে ভগবানের প্রাসাদে পৌঁছে ব্যাঙ দেখল, সেখানে সবাই নানান ভোজ ও আনন্দ-উৎসবে ব্যস্ত । ভগবান তাদের স্ত্রী ও মন্ত্রীদের নিয়ে মহানন্দে দিন কাটাচ্ছে ।
৮.৫ প্রাসাদের দৃশ্য দেখে ব্যাঙ রাগে উত্তেজিত হয়ে পড়ল কেন ?
উত্তর : ‘পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে’ গল্পে প্রাসাদের দৃশ্য দেখে ব্যাঙ রাগে উত্তেজিত হয়ে পড়ল কারণ পৃথিবীতে খুব খরা হয়েছে। মানুষ, পশু, গাছপালা ধ্বংস হয়ে গেছে । অথচ ভগবান পৃথিবীর দুরাবস্থার দিকে নজর না দিয়ে তাদের স্ত্রী ও মন্ত্রীদের নিয়ে মহানন্দে নানান ভোজ ও আনন্দ-উৎসবে ব্যস্ত ।
৮.৬ ভগবান ও তার রক্ষীরা মৌমাছি, বাঘ, মোরগের হাতে কীভাবে নাকাল হলো ?
উত্তর : ‘পাহাড়িয়া বর্ষার সুরে’ গল্পে মৌমাছিরা রক্ষীদের মুখে হুল ফুটিয়ে দিয়েছিল । বাঘ তাদের খেয়ে নেবে বলে ভয় দেখিয়েছিল । মোরগ তার ডানা ঝাপটে ভয় দেখিয়েছিল । এইভাবে ভগবান ও তার রক্ষীরা মৌমাছি, বাঘ, মোরগের হাতে নাকাল হয়েছিল ।
৮.৭ শিক্ষক /শিক্ষিকার সাহায্যে ‘বৃষ্টি’ নিয়ে প্রচলিত দুটি ছড়া ও দুটি গল্প সংগ্রহ করো ।
উত্তর : ‘বৃষ্টি’ নিয়ে প্রচলিত দুটি ছড়া –
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদে এল বান,
শিবঠাকুরের বিয়ে হল তিন কন্যে দান ।
আয় বৃষ্টি ঝেপে ধান দেবো মেপে,
ধানের ভেতর পোকা খোকন সোনা বোকা ।
‘বৃষ্টি’ নিয়ে প্রচলিত দুটি গল্প –
তালনবমী, পথের পাঁচালী ।