অষ্টম শ্রেণী (বাংলা)
" লোকটা জানলই না" কবিতা
সুভাষ মুখোপাধ্যায়
হাতে কলমে অনুশীলন প্রশ্নের উত্তর
সুভাষ মুখোপাধ্যায় (১৯১৯-২০০৩) : বাংলা কবিতায় এক উল্লেখযোগ্য নাম কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়। ১৯৪০ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ পদাতিক প্রকাশিত হয়। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে
অগ্নিকোণ,চিরকুট, ফুল ফুটুক, যত দূরেই যাই, কাল মধুমাস, ছেলে গেছে বনে, জল সইতে, প্রভৃতি। তাঁর গদ্য রচনার দৃষ্টান্ত কাঁচা-পাকা, ঢোল গোবিন্দের আত্মদর্শন প্রভৃতি গ্রন্থে ছড়িয়ে রয়েছে।
১.১ কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম কী?
উঃ- "পদাতিক"।
১.২ তাঁর লেখা দুটি গদ্যগ্রন্থের নাম লেখো।
উঃ-কাঁচা-পাকা, ঢোল গোবিন্দের আত্মদর্শন।
২. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :
২.১ ‘বাঁদিকে বুক পকেটটা সামলাতে সামলাতে ...’ – এখানে ‘বাঁদিকের বুক পকেট’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উঃ-এখানে বাঁদিকের বুক পকেট’ বলতে গচ্ছিত টাকা বোঝানো হয়েছে।অর্থের প্রতি হিসেবি মানুষটির লালসা মনোভাব বোঝানো হয়েছে।
২.২ ‘ইহকাল পরকাল’ – এই শব্দদ্বয় এখানে কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
উঃ-" ইহকাল" বলতে চলমান জীবনের সময় কালকে বোঝানো হয়েছে । "পরকাল"বলতে মৃত্যুর পরবর্তী সময় কে বোঝানো হয়েছে
শব্দার্থ : কড়ি – শামুক জাতীয় প্রাণীর খোল বিশেষ।
২.৩ কবিতায় লোকটির দু-আঙুলের ফাঁক দিয়ে কী খসে পড়ল?
উঃ । উত্তর কবিতায় লোকটির দু-আঙুলের ফাঁক দিয়ে লোকটির সুন্দর জীবন রুপী তারা খসে পড়ল। অর্থের পিছনে ছুটতে গিয়ে যে জীবনকে তিনি বাঁচাতেই পারেন নাই।
২.৪ 'আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ' আসলে কী? তাকে এরকম বলার কারণ বুঝিয়ে দাও।
উত্তর » আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ আসলে রূপকথায় কাহিনীতে মায়াবী প্রদীপ—যা আমাদের মনের কোণে লুকিয়ে থাকা আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে। আমাদের হৃদয়কে কবি আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ
বলেছেন, কারণ এই প্রদীপের আশ্চর্য ক্ষমতাতেই আমরা আমাদের মনের সমস্ত আশা আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করতে পারি। এখানে লোকটি অর্থের পেছনে ছুটতে ছুটতে নিজের জীবনটাকে হারিয়ে ফেলেছিল।
৩. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর কয়েকটি বাক্যে লেখো :
৩.১ ‘লোকটা জানলই না’ পঙ্ক্তিটি দু-বার কবিতায় আছে।একই পক্তি একাধিকবার ব্যবহারের কারণ কী?
উত্তর» ‘লোকটা জানলই না’ । লোকটা কী জানল না। এখানে কবি দুটি জিনিসে জানার কথা বলেছেন ।লোকটি যে দুটি জিনিস জানল না, প্রথমত, জামার বাঁদিকের বুকপকেটের একটু নীচে আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের মতো তার একটা হৃদয় আছে সেটা জানল না;
দ্বিতীয়ত, লোকটি একদিন মরেও গেল। অথচ তখনও তার জানা হল না হৃদয় দিয়ে বাঁচার অর্থ তার মূল্য কত। তাই কবি এই কথাটি দু-বার ব্যবহার করেছেন। উক্তিটি দুইবার ব্যবহার করে কবি পাঠকের কবিতার মূল অংশটা তুলে ধরতে চেয়েছেন।
৩.২ কবি ‘হায় হায়’ কোন্ প্রসঙ্গে বলেছেন? কেন বলেছেন
উত্তর ‘লোকটা জানলই না’ কবিতায়
প্রসঙ্গে ‘হায় হায়’ কথাটি ব্যবহার করেছেন।
লোকটি বুকপকেটে গচ্ছিত টাকা-পয়সা সামলেছেন, অথচ বুকপকেটের একটু নীচেই আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের মতো
তার যে একটি হৃদয় আছে তা জানতেও পারেননি। এরকম মূল্যবান একটি সম্পদ থাকতেও তিনি তা বুঝতেই পারেননি। কবি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে ‘হায় হায়’ করে সেই আক্ষেপর সুরে ব্যঙ্গ করেছেন।
৩.৩ কবিতাটির নামকরণ যদি 'হৃদয়' বা 'আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ’ হত তাহলে তা কতটা সার্থক হত?
উত্তর। আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ ও লোকটি জানলোই না এই দুটি নামই সমভাবনাকে বহন করে।
কিন্তু কবির বক্তব্য পাঠককে তার নিজের হৃদয়ের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যই ‘লোকটা জানলই না’ নামটি তুলনায় সার্থক,
অন্যদিকে 'হৃদয়’ বা ‘আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ' নামকরণ করা হলে রূপকথা গল্পের সঙ্গে কিছুটা সম্পর্ক হয়ে যেত। কবিতার ভাবকে ততটা প্রকাশ করতে পারত না
৩.৫ ‘অথচ’ শব্দটিকে ব্যাকরণের ভাষায় কী বলি? কবিতায় এই ‘অথচ’ শব্দটির প্রয়োগ কবি কেন করেছেন?
উত্তর-অথচ’ শব্দটিকে ব্যাকরণের ভাষায় অব্যয় পদ ।
এখানে কবি দুটি বিপরীত অবস্থানকে ব্যঞ্জিত করার জন্য অথচ শব্দটি কবি প্রয়োগ করেছেন।