বোঝাপড়া (Bojhapara) অনুশীলনী প্রশ্ন উত্তর | Class 8 | WBBSE
বোঝাপড়া
১.১ জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত কোন পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিয়মিত লিখতেন?
উত্তর : জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রকাশিত ভারতী ও বালক পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিয়মিত লিখতেন।
১.২ ভারতের কোন প্রতিবেশী দেশে তাঁর লেখা গান জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয় ?
উত্তর : প্রতিবেশী দেশ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গান ‘আমার সোনার বাংলা জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গাওয়া হয়।
২. নিচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর দাও:
২.১ ‘সেইটে সবার চেয়ে শ্রেয়।‘ - কোনটি সবার চেয়ে শ্রেয়?
উত্তর : কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বোঝাপড়া কবিতায় বলেছেন, মানুষের জীবনে সুখ-দুঃখের সহাবস্থান স্বাভাবিক। জীবন যখন অনেক দুঃখের ঝড় ভেদ করে সুখের আশ্রয়ে যায় তখন আনন্দের সীমা থাকে না। তবে তা স্থায়ী নয়, সাময়িক। পৃথিবীর সাগরে লুকিয়ে থাকা বেদনার পাহাড়ে আছড়ে পড়তে পারে জীবন। এই ক্ষতির জন্য অন্যকে দোষারোপ না করে মারামারি না করে মনের জোরে আবার ভাসতে পারাটাই ভালো এবং যুক্তিসঙ্গত।
২.২ ‘ঘটনা সামান্য খুবই।‘ - কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বোঝাপড়া কবিতায় বলেছেন, সুখ-দুঃখ-আনন্দ-বেদনায় গড়া এই পৃথিবীতে সাগরে মানব জীবন সব রকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। সেই জীবনকে পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিচালনা করলেই জীবন সম্পূর্ণ অর্থবহ হয়। যে ব্যক্তি তা করতে পারে না তাকে প্রবেশ করতে হয় যন্ত্রণার গভীর সাগরে। এমনকি যেখানে কোন ভয় নেই, ভাগ্য ডুবে যেতে পারে। কিন্তু মানবজীবনের চক্রে এটি একটি অতি ক্ষুদ্র ঘটনা।
২.৩ 'কেমন করে হাত বাড়ালে / সুখ পাওয়া যায় অনেকখানি।' - উদ্ধৃতিটির নিহিতার্থ স্পষ্ট করো।
উত্তর : আলোচ্য অনুচ্ছেদটি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বোঝাপড়া কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। কবিতায় কবি দেখিয়েছেন, পৃথিবীতে মানুষের জন্য যতই ভালোবাসা থাকুক না কেন, সবাই সবার জন্য সমান নয়। সবার মন কখনো এক হয় না। প্রত্যেকে অন্যের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে চায় এবং নিজের ইচ্ছামত অন্যকে শাসন করতে চায়। কিন্তু এই পরিবেশও ভারসাম্যপূর্ণ হতে পারে। পারস্পরিক পীড়াপীড়িকে গুরুত্ব না দিয়ে যদি একটু বিনয়ের সাথে বন্ধুত্বের হাত প্রসারিত করা যায় তাহলে মানুষের স্বাভাবিক চরিত্রে পারস্পরিক নমনীয়তা ফুটে ওঠে। এবং তারপরে আকাঙ্ক্ষিত সুখ পাওয়া সম্ভব।
২.৪ ‘মরণ এলে হঠাৎ দেখি/ মরার চেয়ে বাঁচাই ভালো’ - ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : আলোচ্য অনুচ্ছেদটি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বোঝাপড়া কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। এই কবিতায় কবি মানুষকে সত্যের আরাধনা করে সুন্দর জীবন যাপনের পথ দেখিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, মানবজীবন সত্যকে গ্রহণ করার মাধ্যমে স্বস্তি লাভ করে, তা ভাল হোক বা খারাপ। কিন্তু সাধারণভাবে এটা মেনে নেওয়া খুবই কঠিন। যারা একবার এই ব্যথা অনুভব করেছেন, তাদের জন্য কষ্টের বোঝা বাড়ে। পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক না কেন, পরিস্থিতি বুঝে তাল মিলিয়ে চলতে থাকলে এই পৃথিবীর বুকে দাঁড়িয়ে নীল আকাশ থেকে অস্ত যাওয়া সকালের সূর্যের সোনালি আলো মনকে মিষ্টি স্বাদে ভরিয়ে দেয়। তাই আমি সুখ দুঃখে ভরা পৃথিবী পছন্দ করি। দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে হলে মনের স্তরে মৃত্যু ঘটে, তাতে জেগে ওঠে বাঁচার আকুতি।
২.৫ ‘তাহারে বাদ দিয়েও দেখি/ বিশ্বভুবন মস্ত ডাগর|’- অংশটি মধ্য দিয়ে জীবনের কোন সত্য প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বোঝাপড়া কবিতা থেকে উদ্ধৃত এই ছাত্রের মাধ্যমে মানব জীবনের চিরন্তন সত্য প্রকাশ পায়। এই পৃথিবীতে অনেক জীবনের মধ্যে মানুষের জীবনই শ্রেষ্ঠ। কারণ মানুষের বিভিন্ন মত প্রকাশ করার ভাষা আছে। আর এই কারণে, স্বাভাবিক মানবিক প্রবৃত্তির গুণে, মানুষ যেমন সুখ এবং আনন্দ অনুভব করে, তেমনি তারা দুঃখও অনুভব করে এবং বেদনায় আহত হয়। মানুষ যদি ব্যক্তিগত জীবনের সুখ-দুঃখকে উপেক্ষা করে প্রকৃত সত্যকে গ্রহণ করতে পারে, তবে এই পৃথিবী তার জন্য অমৃতের আধারে পরিণত হয়। এই সত্যটি কার্যকরভাবে এই লাইনের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
২.৬ কিভাবে মনের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে হবে?
উত্তর : বোঝাপড়া কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মনের সঙ্গে বোঝাপড়া সহজ অথচ নিরন্তর উপায়টি দেখিয়ে দিয়েছেন। মনের মধ্যে নানা আশঙ্কা জটিলতা অভিমান ইত্যাদির বাস। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তা থাকবে তা নিয়ে ভাবনা করাই বৃথা। কিবুল মনের মধ্যে আনতে হবে দৃঢ়তা। ভালো হোক মন্দ হোক যা সত্য তাকে সহজভাবে গ্রহণ করার ক্ষমতা ও দৃঢ়তা থাকতে হবে। সেই সঙ্গে মনে রাখতে হবে সংসারে সকল মানুষ এক রকম নয়। মনের মত মানুষ পাওয়া দুর্লভ ব্যাপার। বৈচিত্র্যময় মানব চরিত্র সমূহের সঙ্গে পরিস্থিতি তাল মিলিয়ে চলতে পারলে সুখ-দুঃখ আনন্দ-বেদনা কে জীবনের স্বাভাবিক নিয়ম ভেবে মেনে নিতে পারলে মনের শান্তিতে ব্যাঘাত ঘটবে না।
২.৭ ‘দোহাই তবে এ কার্যটা/ যতশীঘ্র পারো সারো।‘ - কবি কোন কাজের কথা বলেছেন? এই কার্যটি শীঘ্র সারতে হবে কেন?
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বোঝাপড়া কবিতা থেকে গৃহীত এই অংশটি কবি একটি বিশেষ কাজের উল্লেখ করেছেন। এই বিশেষ কার্যটি হল বিধি তথা ঈশ্বরের সঙ্গে বিবাদ করে নিজের পায়ে কুড়ুল মারা অর্থাৎ নিজের অসহায়ত্ব আরো বাড়িয়ে তোলা। মানুষ নিজেকে অনেক বড় মনে করে অবশেষে সে যখন বোঝে যে ঈশ্বরের দুনিয়ায় তার স্থান অতি নগন্য তখন জীবনের অনেকটা সময় পার হয়ে যায়। কাজেই বিধির সঙ্গে বিবাদ করে মানব জীবনের সার্থকতা লাভের উপায় খুঁজে নেওয়ার কাজটি তাড়াতাড়ি করাই ভালো। কারণ যত শীঘ্র এই কাজ করা যাবে ততো বেশি দিন মানুষ তার জীবনকে সুন্দর ভাবে উপভোগ করতে পারবে।
২.৮ কখন আধার ঘরে প্রদীপ জ্বালানো সম্ভব?
উত্তর : বোঝাপড়া কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মানব মনের গভীর রহস্যের দ্বার খুলে দিয়েছেন। তিনি দেখিয়েছেন যে সব মানুষ দোষে-গুণে তৈরি। কেউ কারো মন মত হয়না। তাই মানুষ নিজেকে সবার বড় ভাবতে গিয়ে নানা যন্ত্রণার সম্মুখীন হয়। সেই কষ্টের মাধ্যমেই মানুষ ঈশ্বরের অস্তিত্ব অন্তর দিয়ে অনুভব করে। তখন পূর্ব কৃতকর্মের দরুন অনুতাপ অনুশোচনার অশ্রুতে ধুয়ে যায় মনের সকল গ্লানি। জেমন অন্ধকারে আচ্ছন্ন ছিল জ্ঞানের আলো জ্বলে ওঠে সেই মনের প্রদীপে।
২.৯ ‘ভুলে যা ভাই কাহার সঙ্গে / কতটুকুন তফাৎ হলো।‘ - এই অংশটির মধ্য দিয়ে জীবনের চলার ক্ষেত্রে কোন পথের ঠিকানা মেলে?
উত্তর : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বোঝাপড়া কবিতা থেকে নেয়া ছত্রটিতে জীবনের চলার ক্ষেত্রে যে পথ ও চিরকালের কাম্য তারিকা না মিলে যায়। সমস্ত মানুষ সমান হয় না। মানুষের মানুষের রয়েছে মতপার্থক্য। সেই তফাতটা কে বড় করে না দেখে সামগ্রিকভাবে মানুষ যাত্রার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সকল মানুষকে সমান চোখে দেখার কথাই কবি এখানে বলেছেন। এইভাবে চলার মাধ্যমে প্রকৃত মানবতাবাদের সন্ধান পাওয়া যায়।
২.১০ ‘অনেক ঝঞ্ঝা কাটিয়ে বুঝি / এলে সুখের বন্দরেতে’ - ঝঞ্জা কাটিয়ে আসা বলতে কী বোঝো?
উত্তর : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বোঝাপড়া কবিতা থেকে ঝঞ্জা কাটিয়ে আসা বলতে মানব জীবনের বিভিন্ন দুর্বিষহ পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বিস্তৃত সময় জুড়ে যে জীবন তা কখনোই ধারাবাহিক সুখের স্রোতে হয় না। নদীর বুকে জোয়ার ভাটার মতো জীবনে থাকে সুখ দুঃখের পালা। তবে মানুষের কাছে দুঃখ-কষ্ট বেদনার ভার বেশি। চোখের ঝলক দেখা দিও মরীচিকা হয়ে উঠেছে। তাই যে মানুষ সকল অবস্থাতেই নিরপেক্ষতা অর্জন করতে পারে সে সুখের বন্দরে চিরকালের বাসিন্দা হয়ে উঠতে পারে। তবে সেই জায়গায় আসতে হলে দুঃখ-কষ্টের বহু ঝড়-ঝাপটা সামাল দিতে হয়। এই সামাল দেওয়াটাই তার জীবনের সাধনা।
৩। নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখ।
৩.১ ‘ভালো মন্দ যাহাই আসুক/ সত্যরে লও সহজে।‘ - তুমি কি কবির সঙ্গে একমত? জীবনে চলার পথে নানা বাধা কে তুমি কিভাবে অতিক্রম করতে চাও?
উত্তর : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বোঝাপড়া কবিতা থেকে গৃহীত অংশটি সঙ্গে আমি একেবারেই একমত। কারণ কোভিদ এই দর্শনই প্রতিটি মানুষের জীবন দর্শন হওয়া উচিত। জীবনে চলার পথ চিরকাল সমান থাকে না। চলার পথে মনের ইচ্ছা পূরণের ক্ষেত্রে নানা রকম বাধা বিঘ্ন আসতেই পারে। এই বাধাবিঘ্ন দেখে ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেলে চলবেনা। বরং লক্ষ্য পথে অবিচল থাকতে হবে। তা করতে গিয়ে যেখানে যখন যেমন পরিস্থিতি আসবে নিজেকে তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। তাহলেই কঠিন পরিস্থিতি সহজ হয়ে উঠবে। তখন বাধাবিঘ্ন অতিক্রম করার পথ সুগম হবে। চলার পথে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে প্রতিপক্ষের মন জয় করতে হবে। সেইসঙ্গে ইশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রেখে অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ না করে নেয় আদর্শে অবিচল থেকে চলার পথে যে কোনো বাঁধাবিঘ্ন কে অতিক্রম করে যেতে হবে।
৪ নীচের শব্দগুলির দল বিশ্লেষণ করে মুক্ত দল ও রুদ্ধ দল চিহ্নিত করাে : বোঝাপড়া, কতকটা, সত্যেরে, পাজোরগুলা, বিশ্বভবন, আশুসাগর।
» বোঝাপড়া = বাে-ঝা-প-ড়া (মুক্তদল-বাে, ঝা, প, ড়া , (৪টি), রুদ্ধদলশূন্য (০)]।
» কতকটা = ক-তক্ - টা [মুকদল ---ক, টা, (২ টি), রুদ্ধদল—তক (১টি)]।
» সত্যেরে = সত্- তে -রে [মুক্তদল—তে, রে (২ টি), রুদ্ধদল—সতু (১টি)] ।
» পাজরগুলাে= পাঁ- জর -গু-লাে (মুক্তদল—পাঁ, গু, লাে (৩টি), রুদ্ধদল—জর (১টি)]।
»বিশ্বভুবন= বিশ্ –শ (ব)-ভু-বন্ [মুক্তদলশ --শ (ব), ভু (২ টি), রুদ্ধদল বিশ, বন্ (২ টি)] ।
» অশুসাগর= অশ্-রু -সা-গর (মুক্তদল--রু , সা (২ টি), রুদ্ধদল—অশ, গর (২ টি)]
৫ নীচের প্রতিটি শব্দের তিনটি করে সমার্থক শব্দ লেখাে : মন , জখম, ঝঞ্জা , ঝগড়া, সামান্য, শঙ্কা, আকাশ।
» মন = হৃদয়, হিয়া, চিত্ত । » জখম = ক্ষত, আঘাত, চোট। » ঝঞ্জা = ঝড়, বাদল, ঝটিকা । » ঝগড়া = কলহ, বিবাদ, বচসা। » সামান্য= তুচ্ছ, অল্প, কম। » শঙ্কা = ভয়, আশঙ্কা, সংশয়। » আকাশ = গগন, অম্বর, শূন্য।
৬ নীচের প্রতিটি শব্দের বিপরীতার্থক শব্দ দিয়ে শব্দজোড় তৈরি করে বাক্য রচনা করাে : আঁধার, সত্য, দোষ, আকাশ, সুখ।
» আঁধার (আলাে) = আলাে-আঁধার > ঘন জঙ্গলে চেয়েছেন আন্তরিকতার সঙ্গে, মনে বিন্দুমাত্র দ্বিধা নারেখে যদি পারস্পরিক সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেওয়া সূর্যের আলাে পড়ে যেন আলাে-আঁধারের খেলা চলছে।
» সত্য (মিথ্যা) =সত্য -মিথ্যা > সত্য -মিথ্যা যাচাই করে তারপর যা করার করব
» দোষ (গুণ) = দোষ-গুণ > দোষ-গুণ নিয়েই মানব সহজ-সাবলীল-ছন্দময় করে তােলে।
» আকাশ (পাতাল) = আকাশ-পাতাল > যা হয় যাবে, অত সব আকাশ-পাতাল ভেবে লাভ নেই।
» সুখ (দুঃখ) = সুখ-দুঃখ > জীবনে সুখ-দুঃখ পালাক্রমে আসে, তাই সব অবস্থাতেই তৈরি থাকতে হবে।
৩.২ মনেরে আজ কহ যে/ ভালো মন্দ যাহাই আসুক/ সত্যরে লও সহজে। - কোভিদ মতো তুমি কি কখনো মনের সঙ্গে কথা বল? সত্যকে মেনে নেবার জন্য মনকে তুমি কিভাবে বোঝাবে? একটি পরিস্থিতি কল্পনা করে বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর : কোভিদ মতো এমন ছন্দে গভীরভাবে নিয়ে আমি মনের সঙ্গে কথা বলি না। তবে প্রায় সময়ই বিভিন্ন বিষয়ে আমি মনের সঙ্গে কথা বলি ও তর্ক করি। বোঝাপড়া কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভালো-মন্দ নির্বিশেষে সত্যকে গ্রহণ করার যে দার্শনিক উপদেশ দিয়েছেন তা আমার কাছে গ্রহণীয়। জীবনে চলার পথে আমি এই উপদেশ মেনে চলতে যেন পারি। কিভাবে এই উপদেশ আমার জীবনে বড় হতে পারে তার একটি কাল্পনিক ভাষাচিত্র তৈরি করা হল। ধরা যাক কোন একটা জায়গায় আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ট্রেনে চড়ে বেড়াতে যাচ্ছি। আমার সব বন্ধু এক কামরাতে নেই। ট্রেন চলছে দুরন্ত গতিতে। হয়তো তখন রাত্রেবেলা। সংরক্ষিত কামরায় অনেকেই তখন ঘুমাচ্ছে। আমার ঘুম আসছে না। লোয়ার বার্থ ডে আধশোয়া অবস্থায় জানলা দিয়ে জমাটবাঁধা চলন্ত অন্ধকারকে দেখছি। হঠাৎ প্রচন্ড শব্দে আর তীব্র ঝাকুনিতে বার থেকে ছিটকে পড়লাম। মুহূর্তে কামরার ভিত্তি গভীর অন্ধকার আর মানুষের আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠলো। নিজের দুটো পায়ে যেন বিশাল পাহাড়ের বোঝা। কি হলো কেন হলো কিছুতেই বুঝতে পারছি না কিন্তু চেতনা হারায়নি। অনেক কষ্টই পকেট থেকে পেন্সিল দশটা বার করলাম। আলো জ্বেলে দেখি কামনার অবস্থা যেন সতীর দেহত্যাগ এরপর রাজা দক্ষের যজ্ঞ স্থল। কামরাটা লাইন থেকে সরে এলেও উল্টে যায় নি। কামরাই আমার বন্ধুরা মোটামুটি অক্ষত। কিন্তু আমাদের সামনের বগিতে আরো কয়েকজন বন্ধু কেমন আছে তা জানার জন্য কামরা থেকে বেরিয়ে এলাম। কিন্তু অনেক উঁচুতে আকাশের একফালি চাঁদের আলো যা দৃশ্য দেখলাম তাতে বুক কেঁপে উঠলো। সামনের চারটি বুগি সম্পূর্ণ কাত হয়ে পড়েছে। দুটো বগি দুমড়ে মুড়চে গেছে। মানুষের আর্তনাদে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। ভয়ঙ্কর দৃশ্যের আকস্মিকতায় মন একেবারে ভেঙে পড়েছে। ঠিক তখনই কবির চিরন্তন কাব্য বাণী মনে সাহস জোগালো। ঠিক করলাম বন্ধুদের খোঁজ নিতে হবে। ভালো মন্দ যাই ঘটুক তাকে সহজে মেনে নিয়ে প্রয়োজনমতো ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩.৩ তেমন করে হাত বাড়ালে/ সুখ পাওয়া যায় অনেকখানি। - কেমন করে কথাটির অর্থ বুঝিয়ে দাও। এখানে কোভিদ কি ধরনের সুখের ইঙ্গিত করেছেন লেখ।
উত্তর : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা বোঝাপড়া কবিতায় লিখিত আলোচ্য অংশে তেমন করে কথাটি বলা হয়েছে যে চলার পথে বহু মানুষের সাক্ষাৎ হবে। সকল মানুষ সমান হয় না। কিন্তু মানুষকে যদি স্বচ্ছ মনে আপন করে নেয়া হয় তার মতো করে তাকে কাছে টানা যায় তবে চলার পথ আরো সহজ হবে। কেমন করে বলতে মানুষকে কাছে টানার জন্য গভীর আন্তরিক ভাবে বোঝানো হয়েছে। এখানে কবি যে সুখের ইঙ্গিত করেছেন তা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত সুখ নয়। এখানে সুখ বলতে বহু মানুষের সঙ্গে ব্যাক্তি সুখের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ জীবনে চলার সঙ্গী সঙ্গী ছাড়া হবে তাদের আন্তরিক ভাবে গ্রহন করে তাদের মতো করে মানিয়ে চলতে পারলে তাদের সুখী করা যায়। আর তাদের সুখী করতে পারার জন্য যে সুখ তার পরিমাণ ব্যক্তিগত সুখের তুলনায় অনেক বেশি। কবি এখানে সেই পর কে সুখী করার মধ্য দিয়ে সুখ অর্জনের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
<< Read More >>
Class 8 All Subject Solution >>