ইতিহাসের ধারণা | Class 6 | History chapter 1 | Questions & Answer
ইতিহাসের ধারণা
A. দু-এক কথায় উত্তর
দাও
:
(a.1) ভরত
জনগোষ্ঠী যে
অঞ্চলে
থাকত
তাকে
কী
বলা
হত?
উত্তর। ভরত জনগোষ্ঠী যে অঞ্চলে থাকত তাকে ভারতবর্ষ বলা হত।
(a.2) ইতিহাসের গল্প
কী
দিয়ে
শুরু
হয়?
উত্তর। কবে, কেন, কীভাবে, কোথায় দিয়ে ইতিহাসের গল্প শুরু হয়।
(a.3) দাক্ষিণাত্যে কোন্
জাতির
বাস
ছিল?
উত্তর। দাক্ষিণাত্যে দ্রাবিড় জাতির বাস ছিল।
(a.4)
শিলনোড়া কী
দিয়ে
তৈরি
হয়?
উত্তর। শিলনোড়া পাথর দিয়ে তৈরি হয়।
(a.5) সমতল
অঞ্চলের লোকেরা
সাধারণত কী
বেশি
খান?
উত্তর। সমতল অঞ্চলের লোকেরা সাধারণত ভাত বেশি খান।
(a.6)
মিক্সার মেশিন
কীসে
চলে?
উত্তর। মিক্সার মেশিন বিদ্যুতে চলে।
(a.7) ইতিহাসের কথা
কি
মনগড়া
কথা
বলে
তোমার
মনে
হয়?
উত্তর। না, ইতিহাসের কথা মনগড়া কথা নয়।
(a.8)
হামানদিস্তা সাধারণত কী
দিয়ে
তৈরি
হয়?
উত্তর। হামান দিস্তা সাধারণত লোহা দিয়ে তৈরি হয়।
(a.9) ভারতের
উত্তর
অংশকে
আর্যাবর্ত বলা
হত
কেন?
উত্তর। আর্যরা ভারতের উত্তর অংশে বাস করত বলে ভারতের উত্তর অংশকে আর্যাবর্ত বলা হত।
(a.10) পুরোনো
দিনের
বেশিরভাগ সভ্যতা
কোথায়
তৈরি
হয়েছিল?
উত্তর। পুরোনো দিনের বেশিরভাগ সভ্যতা নদীর ধারে।
(a.11) নদীর
তীরে
গড়ে
ওঠা
সভ্যতায় মানুষ
নদীকে
কীসের
মতো
মনে
করত।
উত্তর। মায়ের মতো মনে করত।
(a.12) ভারতীয় উপমহাদেশকে একসময়
কী
বলা
হত?
উত্তর। ভারতীয় উপমহাদেশকে এক সময় ভারতবর্ষ বলা হত।
(a.13) কাবেরী
নদীর
দক্ষিণ
অংশকে
কোন্
দেশ
বলা
হত?
উত্তর। কাবেরী নদীর দক্ষিণ অংশকে দ্রাবিড় দেশ বলা হত।
(a.14) নদীমাতৃক সভ্যতা
কাকে
বলে?
উত্তর। নদীর উপর নির্ভর করে যে সভ্যতাগুলি তৈরি হয়েছিল তাদের নদীমাতৃক সভ্যতা বলা হয়।
(a.15) যে
সময়ের
মানুষ
আজ
বেঁচেও
নেই
সেই
সময়ের
কথা
কীভাবে
জানা
যেতে
পারে?
উত্তর। ইতিহাস বই পড়ে জানা যেতে পারে।
(a.16) বিন্ধ্যপর্বতের দক্ষিণ
দিকের
অঞ্চল,
কীরূপ
ছিল?
উত্তর। বিন্ধ্যপর্বতের দক্ষিণ দিকের অঞ্চল ছিল তিনকোনা অঞ্চল।
(a.17) রূপকথার গল্পে
তোমরা
কেমন
ঘোড়ার
কথা
পড়ো?
উত্তর। ডানাওয়ালা পক্ষীরাজ ঘোড়ার কথা পড়ি।
(a.18) সমতল
অঞ্চলে
সাধারণত কী
চাষ
বেশি
হয়?
উত্তর। সমতল অঞ্চলে সাধারণত ধান চাষ বেশি হয়।
(a.19) ইতিহাসের কথা
কি
শুধুই
গল্পের
মতো?
উত্তর। ইতিহাসের কথা গল্পের মতো হলেও সত্যি।
(a.20) ইতিহাস
কাদের
কথা
বলে?
উত্তর। ইতিহাস মানুষের কথা বলে।
(a.21) কীভাবে
মানুষ
আগুন
জ্বালাতে শিখল
তা
কোথা
থেকে
জানা
যায়?
উত্তর। কীভাবে মানুষ আগুন জ্বলতে শিখল তা ইতিহাস থেকে জানা যায়।
(a.22) মরুভূমির লোকেরা
সাধারণত কীভাবে
যাতায়াত করেন?
উত্তর। উটে চড়ে যাতায়াত করেন।
(a.23) যাঁরা
নদীর
কাছে
থাকেন
তাঁরা
সাধারণত কীভাবে
যাতায়াত করেন?
উত্তর। নৌকায় করে যাতায়াত করেন।
(a.27) রাজস্থানের লোকেরা
সাধারণত কী
বেশি
খান?
উত্তর। রাজস্থানের লোকেরা সাধারণত রুটি বেশি খান।
(a.25)
হামানদিস্তা, মিক্সার মেশিন
ও
শিলনোড়ার মধ্যে
কোন্টির ব্যবহার প্রথম
হয়
বলে
মনে
হয়?
উত্তর। শিলনোড়ার ব্যবহার প্রথম হয় বলে মনে করা হয়।
(a.26) উপমহাদেশ কীসের
মতো?
উত্তর। উপমহাদেশ একটা মহাদেশের মতো বড়ো অঞ্চল।
(a.27) ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর
দিকে
কোন্
অঞ্চল
ছিল?
উত্তর। ভারতীয় মহাদেশের উত্তর দিকে পাহাড়ি অঞ্চল ছিল।
(a.28) সিন্ধু
ও
গঙ্গা
নদীর
দু-পাশে কোন্ অঞ্চল
ছিল?
উত্তর। সিন্ধু ও গঙ্গা নদীর দু-পাশে সমভূমি অঞ্চল ছিল।
(a.29) কোন্
পর্বত
ভারতবর্ষের উত্তর
ও
দক্ষিণ
অংশকে
ভাগ
করেছিল?
উত্তর। বিন্ধ্যপর্বত ভারতবর্ষের উত্তর ও দক্ষিণ অংশকে ভাগ করেছিল।
(a.30) আর্যরা
ভারতের
কোন
অংশে
বাস
করত?
উত্তর। আর্যরা ভারতের উত্তর অংশে বাস করত।
(a.31) ভারতের
কোন্
অংশকে
আর্যাবর্ত বলা
হত?
উত্তর। ভারতের উত্তর অংশকে আর্যাবর্ত বলা হত।
(a.32) বিন্ধ্যপর্বতের দক্ষিণ
ভাগকে
কী
বলা
হত?
উত্তর। বিন্ধ্যপর্বতের দক্ষিণ ভাগকে দাক্ষিণাত্য বলা হত।
(a.33) ইতিহাসের কথা
কোন
দিনের
কথা?
উত্তর। ইতিহাসের কথা হল পুরোনো দিনের কথা।
(a.34) দাক্ষিণাত্য অঞ্চল
কোথা
পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল?
উত্তর। বিন্ধ্যপর্বত থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত দাক্ষিণাত্য অঞ্চল বিস্তৃত ছিল।
B. নিজের ভাষায়
ভেবে
লেখো
(তিন/চার লাইন) :
(b.1) প্রাক্-ঐতিহাসিক, প্রায় ঐতিহাসিক ও ঐতিহাসিক যুগ কাকে বলা হয়?
উত্তরঃ
ইতিহাস
পুরোনো
দিনের
কথা
বলে।
সে
সময়ের
মানুষ
লিখতে
পারুক
আর
নাই
পারুক,
সে
সব
কথা
পড়া
যাক
আর
না
যাক—
সে
সব
বিষয়
যতই
পুরোনো
হোক
না
কেন—পুরোনো দিনের কথাই
হল
ইতিহাস। কিন্তু
আলোচনার সুবিধার জন্য
বা
কাজ
চালানোর জন্য
ইতিহাসকে তিনটি
ভাগে
ভাগ
করা
হয়েছে। প্রাক্-ঐতিহাসিক যুগ, প্রায়-ঐতিহাসিক যুগ
আর
ঐতিহাসিক যুগ।
যে
সময়কার মানুষ
লিখতে
পারত
না,
যে
সময়কার কথা
আমাদের
অনুমান
করে
নিতে
হয়
সেই
সময়টাকে বলা
হয়
প্রাক্-ঐতিহাসিক যুগ। যে সময়
মানুষ
লিখতে
শিখল,
কিন্তু
সেই
লেখা
আজও
পড়া
যায়নি
সেই
সময়টাকে বলা
হয়
প্রায়-ঐতিহাসিক যুগ। যে সময়কার লেখাও
পাওয়া
যায়
এবং
পড়াও
যায়
তাকে
বলা
হয়
ঐতিহাসিক যুগ।
(b.2) ভারতীয় উপমহাদেশের ভূগোল কীভাবে তৈরি হয়েছিল?
উত্তর।
বিরাট
এক
অঞ্চল
নিয়ে
তৈরি
হয়েছিল ভারতীয় উপমহাদেশ। উত্তর
দিকে
ছিল
পাহাড়ি অঞ্চল।
সিন্ধু
ও
গঙ্গা
নদীর
দুপাশে
বিরাট
সমভূমি
অঞ্চল।
বিন্ধ্যপর্বতের দক্ষিণ
দিকে
ছিল
তিনকোনা অঞ্চল।
নানারকমের
পরিবেশ
ও
মানুষ,
মানুষের খাবার,
পোশাক,
ঘরবাড়ি। পাহাড়,
নদী,
সমুদ্র,
মরুভূমি— এই
সব
নিয়ে
ভারতীয়
উপমহাদেশের ভূগোল
তৈরি
হয়েছিল।
(b.3) টীকা লেখো—নদীমাতৃক সভ্যতা।
উত্তর।
পৃথিবীর বেশিরভাগ সভ্যতাই নদীর
তীরে
গড়ে
উঠেছিল। নদীর
উপরে
নির্ভর
করেই
সেই
সব
সভ্যতার
বিকাশ
হয়েছিল। নদীকে
ঘিরেই
সেই
সব
সভ্যতার মানুষজনের রোজকার
কাজ
চলত।
সেখানকার লোকজনের
কাজকর্মে নদীর
গুরুত্ব ছিল
সবথেকে
বেশি।
সেইসব
সভ্যতার কাছে
নদী
ছিল
মায়ের
মতো।
তাই
সেইসব
সভ্যতাকে বলা
হত
নদীমাতৃক সভ্যতা।
(b.4) ইতিহাসে কেবল মানুষের কথাই বলা থাকে কেন?
উত্তর।
মানবসভ্যতার ধারাবাহিক উন্নতি
ও
অগ্রগতির কাহিনিই হল
ইতিহাস। তাই
ইতিহাসে বেশিরভাগ মানুষের কথাই
থাকে।
ইতিহাসে থাকে
মানুষের নানা
কাজকর্মের খোঁজখবর। মানুষ
কীভাবে
আগুন
জ্বালাতে শিখল,
পোশাক
পরতে
শিখল,
ছবি
আঁকতে,
লিখতে-পড়তে শিখল, রান্না
করতে,
বাড়ি-ঘর, গ্রাম-শহর
গড়ে
তুলল,
নদীর
ধারে
বাঁধ
দিল,
চাষ-আবাদ শিখল, গানবাজনা শিখল—এই সবই থাকে
ইতিহাসের পাতায়। এ
ছাড়া
মানুষ
রকেট
তৈরি
করেছিল,
লেখাপড়া শিখল,
শক্তশক্ত অঙ্ক
করতে
শিখল—এসবই মানুষের কথা,
এসবই
থাকে
ইতিহাসের পাতায়। তাই
ইতিহাসের কথা
হয়ে
ওঠে
মানুষের কথা,
ইতিহাস
কেবল
মানুষের কথাই
বলে।
(b.5) টীকা লেখো—'আর্যাবর্ত ও দাক্ষিণাত্য'।
উত্তর।
বিন্ধ্যপর্বত ভারতবর্ষকে সাধারণভাবে দুটি
ভাগে
ভাগ
করেছিল—উত্তর ভাগ ও
দক্ষিণ
ভাগ।
ভারতবর্ষের উত্তর
অংশে
আর্যরা
বাস
করত
তাই
এই
অঞ্চলকে বলা
হত
আর্যাবর্ত। বিন্ধ্যপর্বতের দক্ষিণ
অংশে
আর্যদের বিশেষ
কোনো
প্রভাব
ছিল
না।
বিন্ধ্যপর্বতের দক্ষিণ
অংশকে
তাই
বলা
হত
দাক্ষিণাত্য। দাক্ষিণাত্য অঞ্চল
ছিল
বিন্ধ্যপর্বত থেকে
কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত অঞ্চল।
দাক্ষিণাত্যে ছিল
দ্রাবিড় জাতির
বাস।
কাবেরী
নদীর
দক্ষিণ
অংশকে
তাই
দ্রাবিড় দেশও
বলা
হত।
দাক্ষিণাত্য অঞ্চলের ভাষাগুলিকে দ্রাবিড় ভাষা
বলা
হত।
(b.6) ‘যুগ’ শব্দটির ব্যবহার সম্পর্কে যা জানো লেখো।
উত্তর।
সাধারণভাবে হাজার
হাজার
বছর
বোঝাতে
‘যুগ’
শব্দটি
ব্যবহার করা
হয়।
মোটামুটিভাবে অনেক
লম্বা
একটা
সময়
বোঝাতে
যুগ
কথাটার
ব্যবহার হয়।
যেমন,
হাজার
হাজার
বছর
পৃথিবীতে বরফ
জমেছিল। সেই
লম্বা
সময়কে
বোঝাতে
‘তুষারযুগ' কথাটা
ব্যবহার করা
হয়।
আবার
মানুষ
যখন
তামা,
ব্রোঞ্জ, লোহার
এই
সব
ধাতুর
ব্যবহার শিখল
সেই
সময়কে
বোঝাবার জন্য
‘ধাতুর
যুগ'
বলা
হত।
আবার
ধাতুর
যুগকে
বিভিন্ন ভাগে
ভাগ
করেও
ব্যাখ্যা করা
যায়।
যেমন—যখন মানুষ তামার
ব্যবহার শিখল
তখনকার
সময়টাকে তামার
যুগ
বলা
হত।
আবার
যখন
ব্রোঞ্জের ব্যবহার শিখল,
তখনকার
সময়টাকে ব্রোঞ্জের যুগ
এবং
যখন
লোহার
ব্যবহার শিখেছিল তখনকার
সময়টিকে লোহার
যুগ
বলা
হত।
এই
ভাবেই
যুগ
শব্দটির ব্যবহার হত।
(b.7) শিলনোড়া, মিক্সার মেশিন ও হামানদিস্তার মধ্যে কোন্টি আগে এসেছে ও কোন্টি পরে এসেছে
এবং কেন?
উত্তর।
শিলনোড়া, মিক্সার মেশিন
ও
হামানদিস্তার মধ্যে
আগে
এসেছে
শিলনোড়া তারপর
এসেছে
পাথরের
ও
লোহার
হামানদিস্তা এবং
সবশেষে
এসেছে
মিক্সার মেশিন।
এরূপ
আগে
পরে
আসার
কারণ
হল
মানুষ
আগে
পাথরের
ব্যবহার শিখেছে। শিলনোড়া পাথরের
তৈরি
বা
পাথরের
হামানদিস্তা পাওয়া
গেছে
তাই
এইগুলি
আগে।
এরপর
এসেছে
ধাতুর
যুগ।
হামানদিস্তা লোহার
তৈরি
তাই
দ্বিতীয় ধাপে
এসেছে
লোহার
হামানদিস্তা এবং
একেবারে শেষে
এসেছে
মিক্সার মেশিন
কারণ
মিকসার
মেশিন
বিদ্যুতে চালিত
হয়।
বিদ্যুতের ব্যবহার মানুষ
অনেক
পরে
শুরু
করে
তাই
মিক্সার মেশিন
একেবারে শেষ
পর্যায়ের সৃষ্টি।
(b.8) ইতিহাস বুঝতে হলে ভূগোল জানতে হয় কেন?
উত্তর।
ইতিহাস
ও
ভূগোল—এই দুটি বিষয়
ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কিত। মানুষের অনেক
কাজই
তার
পরিবেশ
ও
ভূগোল
দিয়ে
ঠিক
হয়।
এক
এক
অঞ্চলের পরিবেশ
ও
ভূগোল
এক
এক
রকম।
নদীর
পাশে
যাঁরা
থাকেন
তাঁদের
রোজকার
কাজকর্মে নদীর
গুরুত্ব অনেক।
তাঁরা
যাতায়াতের মাধ্যম
হিসেবে
অনেকেই
নৌকার
ব্যবহার করেন।
তেমনি
যাঁরা
সমতল
অঞ্চলে
থাকেন
সেখানে
ধান
বেশি
হয়
বলে
তাদের
প্রধান
খাদ্য
ভাত।
আবার
মরু
অঞ্চলের লোকের
কাছে
যাতায়াতের মাধ্যম
হিসেবে
উটের
গুরুত্ব অনেক
বেশি।
মরু
অঞ্চলে
ধান
বেশি
হয়
না
তাই
তারা
রুটিই
বেশি
খান।
কেন
ও
কোথায়
এই
দুটি
বিষয়
জানার
জন্যও
পরিবেশ
ও
ভূগোলের জ্ঞান
আবশ্যক। এইভাবেই মানুষের বেশিরভাগ কাজকর্ম তার
পরিবেশ
ও
ভূগোল
মাফিক
চলে।